পৌর মেয়র খোকনের ৩৬ মাসে ৩৬ কোটি টাকার জমি!

সোনাগাজী (ফেনী) প্রতিনিধিসোনাগাজী (ফেনী) প্রতিনিধি
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৪:৩২ পিএম, ১৯ আগস্ট ২০১৯
সোনাগাজী পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন

সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক রফিকুল ইসলাম খোকন ২০১৬ সালে সোনাগাজী পৌর নির্বাচনে অংশ নেয়ার সময় হলফনামায় বসতভিটা, স্ত্রীর গহনা ও ব্যাংক ব্যালেন্সসহ সর্বমোট ২০লক্ষ টাকার সম্পদের বিবরন জমা দিয়েছিলেন। মেয়র নির্বাচিত হয়ে এপ্রিল’১৬ এ দায়ীত্ব নেন। দায়ীত্ব নেয়ার পর সোনাগাজী কাঁচা বাজারে দুটি পৌর মার্কেট বরাদ্দে অনিয়ম, বিনা টেন্ডারে পৌরসভার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ করণ, টেন্ডারের আগেও প্রকল্পের উদ্বোধন, নির্মিত প্রকল্প পুণ: নির্মানের নামে অর্থ লোপাট, প্রবাসীর ভুমি দখল ও মুহুরী সেচ প্রকল্প সংলগ্ন ফেনী নদীর পাড় দখলের অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, দায়ীত্ব গ্রহনের মাত্র ৩বছরে নিজ নামে ঢাকার উত্তরায় রাজউক’র ৫কাঠার প্লট ও সোনাগাজীতে ১১টি দলিলে ১০একর এবং তার স্ত্রী তাসলিমা কাউছরের নামে ৫টি দলিলে ১৪ একর জমি ক্রয় করেন। যার বাজার মূল্য প্রায় ৩৬ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে পৌর মার্কেটের ৪৮টি দোকান বরাদ্দের সময় নির্ধারিত জামানাত ছাড়াও নিজ নামে দোকান প্রতি ৩-৪লক্ষ টাকা অতিরিক্ত আদায় করেন এবং দোকানদারদের জামানতকৃত প্রায় দেড় কোটি টাকা নিজেই উত্তোলন করে ব্যাক্তিগত কাজে ব্যাবহার করেন। পৌরসভার একাধিক উন্নয়ন প্রকল্প টেন্ডারের আগেই উদ্বোধন, ব্যাবসায়ী কর্র্তৃক নির্মিত সড়কের নামে বিল পাশ করে টাকা উত্তোলন, প্রকল্প নির্মান ব্যায়ের চেয়ে ১০গুন টাকায় ভাউচারসহ বহু অনিয়মের অভিযোগে ২০১৭ সালে দুদকে অভিযোগ দেন কাউন্সিলর নুর নবী লিটন।

তিনি বলেন, গত তিন বছর সোনাগাজী পৌরসভা তহবিল মেয়র খোকনের ব্যাক্তিগত তহবিলে পরিনত হয়েছে। যখন যা খুশি তাই করছেন। রাজস্ব ও এডিবির প্রাপ্ত টাকায় কোন প্রকার প্রকল্প কমিটি, টেন্ডার ও রেজুলেশন ছাড়াই নিজেই প্রকল্পের ভাগবাটোয়ারা করে অর্থ লুটপাট করছেন। গত তিন বছরে প্রায় ৫০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। দুদকে অভিযোগ দিয়েও কোন ফল পাওয়া যায়নি।

সোনাপুর গ্রামের বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী রুহুল আমিন বলেন, ২০১৬ সালে পৌর নির্বাচন চলাকালে অর্থ সংকটে পড়ে মেয়র তার ৯শতক বাড়ীর আঙ্গীনা আমার কাছে বিক্রি করেছিলেন। তিন বছর পার হলেও ওই জায়গা বুঝাইয়া দেন নাই। তিনি নিজেই স্থাপনা তৈরি করে ভোগদখলে আছেন। ফেনীর সাংসদ নিজাম হাজারীর কাছে অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাইনি। চর খোয়াজের ভুমি মালিক আবদুল মান্নান বলেন, থাক খোয়াজের লামছি মৌজায় আমার ১২০শতক কৃষি জমি দখল করে মৎস্য খামার করেছে মেয়র খোকন। স্থানীয়ভাবে দেনদরবার করেও দখলমুক্ত করতে পারিনি।

খোন্দকার গ্রামের এক কৃষক বলেন, বড় ফেনী নদীর দুপাড়ে জেগে উঠা চর দখল করে মৎস্য খামার করেন মেয়র খোকন। ওই প্রকল্পের দুপাশে আমার ১৭একর জমি দখল করেন তিনি। বাধা দিলে নামমাত্র মুল্য দিয়ে দান দলিল সৃজনের মাধ্যমে মালিক তিনি। আমি ছাড়াও তার প্রকল্পে অনেক অসহায় কৃষকের জমি রয়েছে।

ভুমি দখলের অভিযোগ গুলো অস্বীকার করে মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, আমি পেশায় আইনজীবি। আইন পেশায় প্রাপ্ত অর্থ, পৈত্রিক সম্পত্তি ক্রয় বিক্রয় করে ও স্ত্রীর জমানো টাকায় জমি কিনেছি।

আপনার মতামত লিখুন :