ইউপি সদস্য শামীমের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ

সোনাগাজী (ফেনী) প্রতিনিধিসোনাগাজী (ফেনী) প্রতিনিধি
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৯:১৪ পিএম, ২৪ জুন ২০২০
অভিযুক্ত গোলাম কিবরিয়া শামীম

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের গোলাম কিবরিয়া শামীম নামে এক মেম্বার (ইউপি সদস্য) বিরুদ্ধে গভীর নলকূপের কথা বলে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোনাগাজী উপজেলার ৮ নং আমিরাবাদ ইউনিয়নে। ওই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার গোলাম কিবরিয়া শামীমের বিরুদ্ধে।
সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভুক্তভোগী প্রবাসী গোলাম মাওলার পরিবার ও এলাকার জনসাধারণ। অবশ্য গোলাম কিবরিয়া শামীম বলেন, তিনি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসের জন্য টাকাগুলো নিয়েছেন আবার উপজেলা যুবলীগের একজন নেতার উপর টাকার বিষয়টি চাপিয়ে দেওয়ার চেস্টাও করছেন তিনি।

ভুক্তভোগী প্রবাসী গোলাম মাওলা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ঐ ইউপি মেম্বার (গভীর নলকূপ)টিউবওয়েল দেওয়ার কথা বলে পাঁচবছর আগে ২৫ হাজার টাকা সংগ্রহ করলেও এখনো পযন্ত গভীর নলকুপ টিউবওয়েলের ব্যবস্থা করে দেননি। ইউপি সদস্য গোলাম কিবরিয়া শামীমের কাছে ভুক্তভোগী প্রবাসীর পরিবার বার বার গভীর নলকূপ টিউবওয়েল চাইলে তিনি ৫ বছর ধরে বিভিন্ন ধরনের টালবাহানা দেন এবং টাকা পেরত চাইলে উল্টো প্রবাসীর পরিবার কে হুমকি প্রদান করে লাঞ্ছিত করেন।
অন্য দিকে সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওজিত দেবের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কাছে লিখিত অভিযোগ আসলে তিনি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান।

সরেজমিনে গেলে ৮ নং আমিরাবাদ ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের চরকৃসজয় গ্রামের মৌলবি রিয়াজ উদ্দিন সাহেবের বাড়ীর মাওলানা সালেহ আহমদ বলেন, বিগত ৫ বছর আগে আমাদের এলাকার গোলাম কিবরিয়া শামীম মেম্বার আমাদের কাছে বলেন, যে এই এলাকার জন্য বেশকিছু গভীর নলকূপ সরকার বরাদ্দ দিয়েছে। গভীর নলকূপ বসানো হলে আর্সেনিকমুক্ত, আয়রনসহ দুর্গন্ধযুক্ত ও ঘোলাটে পানির বদলে সুপেয় পানি পাওয়া যাবে। সুপেয় পানি পাওয়ার আশায় এবং গোলাম কিবরিয়া শামীম মেম্বারের প্রস্তাবে রাজি হয়ে তার হাতে গভীর নলকূপের জন্য প্রথমে ৫ হাজার টাকা এবং দ্বিতীয় ধাপে ২০ হাজার নগদ টাকা তুলে দেই। মেম্বার অগ্রিম ভাবে নলকূপ বসানোর সময় মিস্ত্রীদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থাও করতে বলে প্রতারণা করে শামীম মেম্বার। সুপেয় এবং ভালো পানির আশায় আমরা ছেলে প্রবাসে থেকে কস্ট করে আয় করা ক্যাশ টাকা দিয়ে মেম্বারের প্রস্তাব বিশ্বাস করে মেনে নিই।
তিনি আরো বলেন, আমাদের থেকে ক্যাশ টাকা নিয়ে গভীর নলকূপ না দিয়ে যখন ৫ বছর পর্যন্ত সময় ক্ষেপন করছে তখন আমরা বুঝতে পারি গোলাম কিবরিয়া শামীম মেম্বারের কথা আর নলকূপ দেওয়ার কথা মিল নেই। আমরা জানতে পারি যে ডিপ টিউবওয়েল পেতে হলে সরকারিভাবে যার খরচ হওয়ার কথা সাত হাজার থেকে সাড়ে সাত হাজার টাকা। অথচ গোলাম কিবরিয়া শামীম সেখানে গভীর নলকূপ দেওয়ার কথা বলে ২৫ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ ভুক্তভোগী প্রবাসীর পরিবার।

এ প্রসঙ্গে ৮ নং আমিরাবাদ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার গোলাম কিবরিয়া শামীমের মুঠোফোনে কল করে জানতে চাইলেও তাকে তার মোবাইলে কল করে বার বার চেস্টা করলেও তার ভক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
সোনাগাজী উপজেলা উপ-সহকারী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, টাকা নেয়ার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
উল্লেখ যে গোলাম কিবরিয়া শামীমের বিরুদ্ধে সোনাগাজী ৮ নং আমিরাবাদ ইউনিয়নের এক সেনা সদস্যের বাড়ী ডাকাতি মামলার আসামী। তার বিরুদ্ধে সোনাগাজী মডেল থানায় একাধিক অভিযোগও রয়েছে।
এলাকাবাসীর সুত্রে জানা যায়, ৮ নং আমিরাবাদ ইউনিয়নের ৫ নাম্বার ওয়ার্ডে দীর্ঘ দিন ধরে চলছে তার সন্ত্রাসী কার্যকলাপ। নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক ব্যক্তি বলেন, গোলাম কিবরিয়া শামীমের বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলা এবং আমিরাবাদ এলাকায় অসংখ্য অপকর্মের অভিযোগ থানায় থাকলেও প্রশাসন তাকে গ্রেফতার করছেনা বলেও জানান তারা। তার ভয়ে এলেকার মানুষ আতংকিত হয়ে পড়েছেন।
অন্য দিকে সাংবাদিকরা তার অপকর্ম গুলো নিয়ে সরেজমিনে গিয়ে তথ্য নেওয়ার চেস্টা করলে গোলাম কিবরিয়া শামীম ও তার সহযোগীরা সাংবাদিকদের মামলা দিয়ে দেখে নেওয়ার হুমকি ও দেন তারা।
এবিষয়ে আমিরাবাদের জন-সাধারণ ফেনীর পুলিশ সুপারের সহযোগীতা কামনা করছেন।

আপনার মতামত লিখুন :