কালাপানির কেচ্ছা

জিএস নিউজজিএস নিউজ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১১:৪১ এএম, ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮

স্টাফ রিপোটার:>>>

আমার ছোটবেলাটা কেটেছে আমার চেয়ে একটু বড় বেলার একজনের সাথে। তার নাম আব্দুস ছত্তার। সম্পর্কে আমার ফুপাতো ভাই। তার জন্মের কিছুদিন পরে তার মা মারা যান। সেই থেকে তিনি আমাদের পরিবারের একজন। আমার মাকে তিনি মা ডাকতেন। বয়সে তিনি আমার বড় ছিলেন, কিন্তু আমার মেজ ভাইয়ের সমবয়সী ছিলেন। তার সাথে আমার মিত্রতার মূল রহস্যটা ছিল এখানে। পিঠাপিঠি ভাই-বোনদের মধ্যকার সহজাত মারামারির সাধারণ সূত্রে মেজভাইয়ের সাথে আমার যে শত্রুতা ছিল তার ক্ষতিপূরণ হিসেবে হয়তো দয়াবান খোদাতায়ালা আমার জন্য আমাদের পরিবারে ঐ ছত্তার ভাইয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। ঘরে-বাইরে ক্ষেতে-খালে ছত্তার ভাই ছিল বলেই আমি টের পেতাম আমার জীবনে কেচ্ছা-কাহিনি আর প্রশ্রয়-প্রশংসার অভাব উপলব্ধির কোনো সুযোগ নেই।

ছত্তার ভাইয়ের কিচ্ছা কাহিনির সুবাদেই ছোটবেলায় দুটি স্থান সম্পর্কে আমার ক্রমবর্ধিষ্ণু কৌতূহল জাগতে শুরু করেছিল। একটি কামরূপ কামাখ্যা, অপরটি কালাপানি। অন্তত ত্রিশ বছর যাবৎ সেই কৌতূহল বুকের মধ্যে আগলে ধরে শেষ পর্যন্ত ২০০৮ সালে গিয়েছিলাম কামরূপ কামাখ্যা দেখতে। গিয়ে খুব আশাহত হয়েছি। গিয়ে বুঝতে পেরেছি আমার ছত্তার ভাইয়ের কামরূপ কামাখ্যা দুনিয়ার কোথাও নেই, কোনোদিন ছিল না। ফিরে এসে এ কথা ছত্তার ভাইকে সাহস করে বলিনি। আমার টাকা গেছে, আশা গেছে, যাক, ছত্তার ভাইয়ের সুন্দর গল্পগুলোর সাথে জড়ানো ভাবনা ও কল্পনারা কামরূপ কামাখ্যা নামের আশ্রয়ে ছত্তার ভাইয়ের বুকে অন্তত বেঁচে থাক—সে ভাবনায়ই শুধু কিছুই তাকে বলিনি।

কামরূপ কামাখ্যা দেখতে গিয়ে আশাভঙ্গের যে বেদনা বুকে নিয়ে এসেছিলাম তার ভারে ছত্তার ভাইয়ের গল্পে গড়ে ওঠা কালাপানির কৌতূহলও অনেকটা নিস্তেজ হয়ে পড়েছিল। বুঝতে শুরু করছিলাম যে, কালাপানির ‘চালকুমড়া-মানুষ’ নিয়ে বলা ছত্তার ভাইয়ের গল্পগুলোও কামরূপ কামাখ্যার জাদুকরী নারীদের গল্পগুলোর মতোই ফাঁকা আর ফাঁপা। গল্পের ঢঙই বলে দেয় যে, কালাপানির গল্প বরং আরেকটু বেশিই ফাঁপা হবে। কারণ, সে গল্পে আছে—দাদাদাদী বুড়ো হতে হতে মরার কাছাকাছি পৌঁছলে নাতিরা তাদেরকে চুনের পানিতে নাইয়ে দিয়ে সাদা বানিয়ে ঘরের চালের উপর ছুঁড়ে মারে। তারপর সেই চুন-সাদা বুড়ো মানুষগুলো চালা থেকে গড়িয়ে পড়ে আর নাতি-নাতনিরা বলে—আল্লাহ তাদেরকে আসমান থেকে চালকুমড়া পাঠিয়েছে। এরপর সেই চালকুমড়াগুলো কেটেকুটে রান্না করে তারা খেয়ে ফেলে।

ছত্তার ভাইয়ের গল্পের এই কালাপানি যে কামরূপ কামাখ্যার মতোই দুনিয়ার বাইরের এক গল্প তা একেবারে ত্রিশ-চল্লিশ বছর অপেক্ষা করে বুঝতে হয়নি অবশ্য। তবে এই ত্রিশ-চল্লিশ বছর ধরে কালাপানি সম্পর্কে এদিক সেদিক টুকটাক যা শুনলাম, পড়লাম আর জানলাম তাতে দেখলাম কালাপানি নিয়ে সারা দুনিয়ায় বড় বড় অনেক ছত্তার ভাইদের এমন অনেক গল্পই বেঘোরে এলেম হিসেবে বিলানো হইতেছে এবং তাতে কোথাও তেমন কোনো ভ্রু-কুঁচকানো জাতীয় সমস্যা হইতেছে না। বিচারপতি এস এন আগারওয়ালের মতো বিজ্ঞ মানুষেরা তাদের বইয়েও সেসব এলেমের কথা লিখেছেন। সেসব এলেম-কালামে বলা হয়েছে যে, ভগবান নরক তৈরী করে কালাপানির পূর্ব পাশে রেখে দিয়েছেন। ‘নারকোণ্ডাম’ নামের সেই ‘নরককুণ্ড’ কালাপানির পাশে গিয়ে, যে কেউ ইচ্ছে করলেই গিয়ে দেখে আসতে পারে। দুনিয়ায় বসেই দোযখ দেখতে পারার এই এলেম জিবরাইলের জানা থাকলে মহম্মদকে (স.) মেরাজের রাতে আসমানের দিকে অত দূরে না নিয়ে সোজা আন্দামানের দিকেও হয়তো নিয়ে আসতে পারতো। এম.ভি পোর্টম্যানের মতো বিজ্ঞ ইংরাজও তার ‘এ হিস্ট্রি অব আওয়ার রিলেশনস উইথ দি আন্দামনিজ’ বইয়ে লিখেছেন—কালাপানি তথা আন্দামান হলো রামায়ণ বর্ণিত রাম-রাবণের যুদ্ধে সুগ্রীবের সৈনিক হনুমান বাহিনীর বাসস্থান, তথা হনুমান জাতির বাসস্থান। পোর্টম্যান যা লিখলেন, তা সোজা করলে অর্থ দাঁড়ায় যে, ইংরেজরা আসার আগে কালাপানিতে মানুষ থাকতো না, থাকতো হনুমান। এ বক্তব্যের পিছনে পোর্টম্যান দিয়েছেন অকাট্য প্রমাণ—মালে জাতির লোকেরা হনুমানকে হন্দুমান বলে আর সেই ‘হন্দুমান’ থেকেই আন্দামান শব্দের উৎপত্তি। একেবারে হাতে-ধরা প্রমাণ। বিশ্বাস না করার কোন সুযোগ নেই। কিছুদিন পরে দেখলাম আমাদের বাপ-দাদা-তালইয়ের জন্মের শত শত বছর আগে জ্ঞানীদের সর্বকালের সর্বদেশের ওস্তাদ ক্লডিয়াস টলেমিয়াস অর্থাৎ আমার আপনার সকলের পরিচিত জ্যোতির্বিদ ও গণিতবিদ টলেমিও তার মানচিত্রে দেখিয়েছেন যে কালাপানি হচ্ছে নরখাদক এক প্রকার মানবসদৃশ জাতির বাসস্থান।

কালাপানি নিয়ে দুনিয়াজোড়া এইসব ছত্তার ভাইদের গল্প আমি শেষ পর্যন্ত আর অগ্রাহ্য করতে পারলাম না। তাই ২০০৮ সালে কামরূপ কামাখ্যা দেখতে গিয়ে অর্জিত সকল আশাভঙ্গের বেদনা বুক চাপা দিয়ে ১০ বছর পরে ২০১৮ সালের ২৪ আগস্ট দুনিয়ার বড় বড় ছত্তার ভাইদের গল্পগুলো দেখার আশা নিয়ে রওয়ানা হলাম কালাপানি অর্থাৎ আন্দামানের উদ্দেশ্যে।

২৪ আগস্ট রাতে বরিশাল থেকে আমি আর আমার ভ্রমণসঙ্গী কবি শামীম রেজা সদ্য প্রবর্তিত বরিশাল-কোলকাতা গ্রীন লাইন সার্ভিসের একখানা বাসে উঠে বসলাম। বাসখানা টিকেটে লিখিত সময়ের ঘন্টা দেড়েক পরে যাত্রা শুরু করলেও ভোর হওয়ার আগেই বেনাপোল পৌঁছলো। কথা ছিল আমাদের হয়ে বাস কর্তৃপক্ষ পোর্ট-ট্যাক্স ও ট্রাভেল-ট্যাক্স জমা দেয়ার ব্যবস্থা করবে। কিন্তু তারা দুঃখ প্রকাশ করে তাদের কর্তব্য শেষ করলো এবং আমরা অনেক দুঃখ সয়ে হাজার মানুষের লাইনে দাঁড়িয়ে হনুমানের দেশ (?) আন্দামান যাওয়ার আগেই প্রায় হনুমান হয়ে দুইখানা ট্যাকসো জমার কাজ শেষ করলাম। অতপর ভারতীয় কাস্টমসের রামবাহিনীর হাতে আমরা রাবণের নাতিরা (আমার এক নানার নাম ছিল রাবণ খা) অনেক নাকানিচুবানি খেয়ে শেষ পর্যন্ত পা রাখলাম অধুনা রামরাজ্য ভারতের মাটিতে।

পরের দিন ২৬ আগস্ট সকাল আটটায় একখানা হাওয়াই জাহাজে কোলকাতা থেকে পোর্টব্লেয়ার যাওয়ার জন্য আমাদের দুখানা সিট বরাদ্দ ছিল। ২৬ আগস্ট বেশ সকাল সকাল গিয়ে পৌঁছলাম কোলকাতার নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু বিমানবন্দর। তিন-চার জায়গায় ত্রাস-সন্ত্রাস সংক্রান্ত পরীক্ষায় পাশ করে শেষ পর্যন্ত জায়গা হলো বিমানের প্যাসেঞ্জার ঢিউবে। আল্লাহ আল্লাহ করছিলাম, জানালার কাছে যেন সিটটা হয়। আল্লাহর শত ব্যস্ততার মধ্যে ঐ সব আহ্লাদি শখ শোনার সময় ছিল না। সিট হলো তিন সারির সিটের একেবারে মাঝসারিতে। আল্লাহর কাছে করা ফরিয়াদ পরবর্তীতে বিমানের আপ্যায়ন-বালাদের কাছে জানাতে গিয়ে সিট তো তথায় হলোই না উপরন্তু অপমান অর্থে শ্লেষ হাসির রমণীটি বাঁকা বাক্যে বুঝিয়ে দিলো—আমরা মূর্খরা এটুকুও জানিনা যে বিমানে জানালা থাকে না, থাকে পোর্টহোল। এই সব মান-অপমান মাথায় চক্কর দিতে না দিতে প্লেনখানা রানওয়েতে চক্কর শেষ করে আকাশের দিকে ডানা তুললো। কিছুক্ষণে টের পেলাম আমার মাথায়ও এসব মান-অপমানের ফালতু জিনিস আর চক্কর দিচ্ছে না বরং সেখানে আন্দামানের জানা-শোনা-পড়া গল্পগুলো একটু সুখদ নড়াচড়া শুরু করেছে।

ছত্তার ভাইয়ের গল্পের সেই কালাপানি, সেই আন্দামান, আজ আমি নিজ চোখে দেখে আসতে যাচ্ছি। কত গল্পের সেই আন্দামান! সাগরে প্রায় ডুবন্ত ৭০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এক সারি পাহাড়ের দেশ আন্দামান, যাকে নিয়ে সারা পৃথিবীর পরিব্রাজকদের গল্পের শেষ নেই, নাবিকদের গল্পের শেষ নেই, নৃতাত্ত্বিককদের গল্পের শেষ নেই।

আজকের আন্দামান, বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত একসারি দ্বীপ। মূলত এরা ছিল এক সারি পাহাড়। সাগরে প্রায় ডুবে গিয়ে সেই পাহাড়ের সারিই এখন প্রায় সমতল এক সারি দ্বীপ হয়ে বেঁচে আছে। ৭০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই দ্বীপসারির মোট আয়তন ৮২৪৯ বর্গ কিলোমিটার। দ্বীপের সংখ্যা ৩২১টি। তার মধ্যে মাত্র ৩৮টিতে আজ পর্যন্ত মানুষ বাস করে। বাকিগুলো এখনও জনমানবহীন। নিকটবর্তী মূল ভূখণ্ডের দিক দিয়ে সবচেয়ে কাছে রয়েছে বার্মা। বার্মার সর্বদক্ষিণের কোকো আইল্যান্ড থেকে আন্দামানের উত্তরাংশে অবস্থিত ল্যান্ডফল আইল্যান্ডের দূরত্ব মাত্র ৩৫ কিলোমিটার। ওদিকে সুমাত্রা থেকে আন্দামানের ইন্দিরা পয়েন্টের দূরত্ব ১৫০ কিলোমিটার। অথচ ভারতের মুল ভূখন্ডের নিকটতম স্থান বিশাখাপট্টম বন্দরের দূরত্ব আন্দামানের পোর্টব্লেয়ার থেকে ১২২৪ কিলোমিটার। কোলকাতা থেকে পোর্টব্লেয়ার ১৩০২ কিলোমিটার, আর বাংলাদেশের চট্টগ্রাম থেকে পোর্টব্লেয়ার ১১৯৭ কিলোমিটার। বার্মা, থাইল্যান্ড, মালেশিয়া বা সুমাত্রার কাছে হলেও এই ভূখন্ডের মালিকানা কিন্তু নসিব হয়েছে রামরাজ্য ভারতের। এর পেছনে রামের প্রতি সুগ্রীবের আনুগত্যকে মূল কারণ হিসেবে দেখানোটাই শ্রেয় ও নিরাপদ। যে সুগ্রীব তার হনুমান বাহিনী অর্থাৎ তার আন্দামানের লোকবল নিয়ে রামকে রাবণের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জিতিয়ে দিয়েছিলেন সেই সুগ্রীবের রাজ্য রাম তো আর দূরে ঠেলে দিতে পারে না। তাই রাবণের লঙ্কা আর সুগ্রীবের আন্দামান একই কলোনিয়াল কায়দায় রামের রাজত্বের অন্তর্ভুক্ত হবে এটাই স্বাভাবিক।

তবে পুরাণের এই সকল সূত্রই কেবল আন্দামানকে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করেনি। এতে কলিকালের দাপুটে আর্য ইংরাজ জাতিরও বড় রকম অবদান রয়েছে। ইংরাজদের কাছ থেকেই মূলত উত্তরাধিকারসূত্রে ভারত আন্দামানের মালিক হয়েছে। আর ইংরাজদের আগে আন্দামান কাদের ছিল? রাম কাকে দিয়েছিল রামায়ণে বাল্মীকি তা লিখে রেখে যাননি। তবে আজকালকার নাস্তিক নৃতাত্ত্বিকরা ও ভূতাত্বিকরা যেসব নাস্তিকি রামায়ণ লিখছেন তাতে রামকে পাশ কাটিয়ে আন্দামানের হনুমানদেরকে অনেক বাড়াবাড়ি রকমের আসমানে তোলা হচ্ছে। এরা যা বলেছেন তা শুনলে তো যে-কারোরই রাম রাম বলে দৌড়ে পালানোর জো হবে। এরা বলেছেন—রামের বাপ-দাদা-ভাইয়ের জন্মেরও হাজার হাজার বছর আগের ঐতিহ্য ধরে সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং কারো সাতে-পাঁচে না থাকা এক দেশ হলো আন্দামান। আন্দামানকে কেন্দ্রে রেখে বিস্তৃত সেই রাজ্য কোনো রামরাজত্ব ছিলনা। সে ছিল গন্ডোয়ানা রাজ্য। মহাদেশীয় সাঁতার তত্ত্ব (Theory of Continental Drift) পিতা আলফ্রেড ওয়েজেনার (Alfred Wegener) তার রামায়ণে লিখেছেন যে, আন্দামানকে কোলের মধ্যে আগলে রেখে আফ্রিকা, ভারত, ব্রহ্মদেশ ও অস্ট্রেলিয়া  এক মার পেটের ভাইয়ের মতো একসাথে বাস করছিল। একত্রে তাদের নাম ছিল গন্ডোয়ানা। মোটামুটি ১৮০০ লক্ষ বছর আগে কোন এক অজানা দৈত্য বা দেবতার খামখেয়ালিতে ভাসমান ভূখণ্ড গান্ডোয়ানায় এক কঠিন টান ধরলো। সেই টানে গান্ডোয়ানা পাঁচ টুকরো হয়ে গেলো। অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা, ভারত, ব্রহ্মদেশ সব ভেসে ভেসে দূরে দূরে সরে গেল। মাঝখানে এতিমের মতো পড়ে রইলো এই রাজ্য আন্দামান। তখন সেখানে মানুষ ছিল? আরে কি কয় না কয়! ১৮০০ লক্ষ বছর আগের কথা। তখনো  তো দুনিয়ায় মানুষের চাষই শুরু হয়নি।

তাহলে পরে এই বিচ্ছিন্ন এতিম দ্বীপে মানুষ কীভাবে এলো? টান খেয়ে আলাদা হয়ে যাওয়ার পরেও কিছু পর্বত জাতীয় উচ্চভূমির মাধ্যমে আফ্রিকার সাথে এর যোগাযোগ হয়তো ছিল। সেই চিলতে পর্বতের পথ ধরেই আফ্রিকা থেকে খাবারের সন্ধানে কিছু মানুষ এই দিকে সরে এসেছে। তবে সে ঘটনা ঘটেছে অন্তত এক লক্ষ বছর আগে। এই লক্ষ বছরের হিসাবটা এসেছে বৃটিশ নৃতাত্ত্বিক রেডলিফ ব্রাউনের হাত থেকে। তিনি ১৯০৭ সালে গ্রেট আন্দামানিজদের মাথার চুল নিয়ে প্রমাণ করেছন যে, আন্দামানিজরা আফ্রিকান নেগ্রিটো পিগমি গোষ্ঠির সরাসরির বংশধর। পাঁচ বছরের বেশী সময় ধরে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এক লক্ষ মানুষের জিনগত নমুনা সংগ্রহ করে ২০০০ সালের নভেম্বর মাসে ‘ওয়াই’ ক্রোমোসোম বিশ্লেষণে সর্বশেষ প্রমাণিত হয় যে, আন্দামানের আদিমানবরা অতীতে মধ্য আফ্রিকায় বাস করতো।

অবশ্য এই জেনোগ্রাফিক প্রজেক্টদলের নেতা স্পেন্সার ওয়েলের মতে, কম করে ৫০ হাজার বছর আগে আদি মানুষের সন্তানদল আন্দামান দ্বীপে পৌছেছিল। স্পেন্সারের এই গবেষণা আন্দামানের  প্রথম মানুষের আগমন বিষয়ক পুরনো গল্পগুলো ডাস্টবিনে পৌছে দিয়ে  এ বিষয়ক অনেকদিনের জঞ্জাল সাফ করেছে।

(আমাদের সঙ্গে থাকুন)………..

আপনার মতামত লিখুন :