গভীর পর্যবেক্ষণে রোহিঙ্গা ক্যাম্প

MD Aminul IslamMD Aminul Islam
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০২:০২ পিএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘিরে নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি এখানে কার্যরত বিভিন্ন সংস্থার কার্যক্রম গভীর পর্যবেক্ষণের আওতায় নিয়ে আসছে সরকার। এর অংশ হিসেবে সংশ্নিষ্ট বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে পরিবর্তনসহ বেশ কিছু নতুন ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।

যা নজরে এসেছে সরকারেরঃ

সম্প্রতি এমন কয়েকটি এনজিওকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তৎপরতা চালাতে দেখা যায়, যেগুলোর কার্যক্রম সেখানে বেশ আগেই এনজিও ব্যুরো নিষিদ্ধ করেছিল। এসব এনজিও রোহিঙ্গাদের মধ্যে উগ্র চিন্তার প্রচার, সরকারবিরোধী প্রচারণা, এমনকি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়ার মতো অপতৎপরতা চালাচ্ছে বলে সরকারের পর্যবেক্ষণে উঠে আসে। কয়েকটি এনজিও রোহিঙ্গাদের বাংলা ভাষা শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি অবৈধভাবে এ দেশের জাতীয় পরিচয়পত্র পাইয়ে দেওয়ার মতো অপরাধমূলক তৎপরতার সঙ্গে জড়িত- এমন তথ্যও উঠে আসে। দেখা যায়, এসব এনজিও শরণার্থীদের খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবা-সংক্রান্ত জরুরি সেবা দেওয়ার জন্য নির্দেশিত ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলেও তা আদৌ দিচ্ছে না।

২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসেই বিতর্কিত এবং এনজিও ব্যুরোর শর্ত লঙ্ঘন করা সাতটি এনজিওর কার্যক্রম বন্ধের সুপারিশ করে স্থানীয় জেলা প্রশাসন। এসব এনজিওর মধ্যে ছিল- এডুকেশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সার্ভিস (ইডিএএস), সেভ দ্য চিলড্রেন, মোয়াস এমডিএস, কোডাক, এসআরপিবি এবং শেড। পরে এনজিও ব্যুরো থেকে মোট ৪১টি এনজিওর একটি তালিকা তৈরি করা হয়, যাদের বিরুদ্ধে ব্যুরোর যথাযথ অনুমোদন ছাড়াই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ ওঠে। তবে রহস্যজনকভাবে ৪১ এনজিওর সুনির্দিষ্ট নামসহ তালিকাটি কখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। অনানুষ্ঠানিকভাবে বেশ কিছু এনজিওর নাম কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়। এমনকি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন গত ৩০ আগস্ট ৪১টি এনজিওর কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত জানালেও এর তালিকা সাংবাদিকদের দিতে পারেনি কক্সবাজারের স্থানীয় প্রশাসন।

এদিকে কক্সবাজারের বিভিন্ন সূত্র জানাচ্ছে, ক্যাম্পে পাকিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক এবং স্থানীয় কিছু এনজিওর রাজনৈতিক তৎপরতা ও উগ্র চিন্তার প্রচারের মতো ঘটনা ঘটছে। কিন্তু এদের কার্যক্রম বন্ধে প্রশাসনিক তৎপরতা চোখে পড়েনি।

ক্যাম্প ব্যবস্থাপনায় নজরদারি বাড়ছেঃ

এতদিন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মানবিক বিবেচনায় বিভিন্ন সংস্থার কর্মীসহ বহিরাগতদের বিচরণের বিষয়টি খানিকটা শিথিলভাবেই দেখা হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কিছু অনভিপ্রেত ঘটনা ও তৎপরতা সরকারের উদ্বেগ বাড়িয়ে তুললে ক্যাম্প ব্যবস্থাপনায় কঠোর নজরদারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগের চেয়ে নিরাপত্তা বাড়ানো হচ্ছে, এনজিওদের কার্যক্রম আরও নিবিড় পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং ক্যাম্পের সার্বিক কর্মকাণ্ডের ওপর নজরদারিও বাড়ানো হচ্ছে। আঙুলের ছাপের মাধ্যমে গ্রাহকের পরিচয় নিশ্চিত না হয়ে সিমকার্ড বিক্রির সুযোগ না থাকলেও রোহিঙ্গারা কীভাবে সিমকার্ড পেল তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

জিএসনিউজ/এমইচএম/এমএআই

আপনার মতামত লিখুন :