বিএনপি নেতারা চাপের মুখে
মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের চাপের মুখে পড়েছেন বিএনপির নীতিনির্ধারক নেতারা। প্রায় দুই মাস পরও ‘প্রহসনের নির্বাচন’ বাতিল ও দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে রাজপথে আন্দোলনের কর্মসূচি না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ তারা। শুক্রবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের গণশুনানিতে অংশ নিয়ে ওই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটান দলীয় প্রার্থী ও নেতারা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কিছুটা নড়েচড়ে বসছেন সিনিয়র নেতারা। দলের বর্তমান ‘প্রতিকূল’ পরিস্থিতিতে ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ধারণে শিগগির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠক আহ্বান করতে যাচ্ছেন তারা। ওই বৈঠকে সারাদেশের মাঠ পর্যায়ের নেতাদের পরামর্শ নিয়ে নতুন কর্মপন্থা নির্ধারণ করবেন দলের নীতিনির্ধারকরা।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন গতকাল দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আমাদের একটু সুযোগ দিন। দলের মধ্যে যেখানে দুর্বলতা রয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে দল পুনর্গঠন শুরু হয়েছে। কারণ সংগঠনকে শক্তিশালী করতে না পারলে আমরা জনগণকে নেতৃত্ব দিতে পারব না। একই সঙ্গে তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করার সুযোগ এসেছে বিএনপির সামনে। এ লক্ষ্যে তারা দলকে প্রস্তুত করছেন।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের উপস্থিতিতে গণশুনানিতে ভোট ‘কারচুপির প্রমাণ’ দিতে এসে সিনিয়র নেতাদের জবাবদিহি চেয়েছেন ধানের শীষের প্রার্থীরা। তারা জানতে চান- ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের আগে ‘হামলা-মামলায়’ প্রার্থীরা ভোটের মাঠে দাঁড়াতে না পারলেও কোনো কর্মসূচি দেওয়া হয়নি। ভোটের আগের রাতে প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রে ‘নৌকায় সিল মেরে’ বাক্স ভরা হলেও কোনো আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়নি।
প্রার্থীরা প্রশ্ন তোলেন- দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ছাড়া কেন নির্বাচনে অংশ নেওয়া হলো? এক বছরের বেশি তিনি কারাগারে থাকলেও মুক্তির দাবিতে কঠোর আন্দোলন করা হচ্ছে না কেন? কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়ার দাবি জানান প্রার্থীরা। শুনানিতে ৪১ জন প্রার্থীর অধিকাংশ নেতা প্রায় একই সুরে কথা বলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিএনপির নীতিনির্ধারকরাও মাঠের নেতাদের সঙ্গে প্রায় একমত। ইতিমধ্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদসহ অনেক নেতা প্রকাশ্যে এ ধরনের বক্তব্য দিতে শুরু করেছেন। তবে নীতিনির্ধারক নেতারা এও মনে করেন, আন্দোলনে যাওয়ার আগে দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করা দরকার। পাশাপাশি হাজার হাজার নেতাকর্মীকে মামলার জাল থেকে বের করে আনা প্রয়োজন।
৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৮২টি আসনে ২০ দলীয় ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা ধানের শীষ প্রতীকে ভোটে অংশ নিয়েছিলেন। দুটি আসনে ছাতা ও আপেল প্রতীকে ছিলেন জোটের প্রার্থীরা। ১৬১টি আসনে ধানের শীষের প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত। মাত্র ৮টি আসনে জয়ী হয়েছেন বিএনপির দুই জোটের প্রার্থীরা। ২৫৮ আসন পাওয়া আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট পেয়েছে ২৮৯ আসন



