মাগফিরাত দশকে সিজদায় পড়ে যাই মুক্তির আশায়

স্টাফ রিপোর্টারস্টাফ রিপোর্টার
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১১:৫১ এএম, ০৭ মে ২০২০

আজ মাগফিরাত দশকের তৃতীয় দিন। রমজানকে তিনভাগে বিভক্ত করার দ্বিতীয় ভাগে আল্লাহ তাআলা তাঁর গাফ্ফার সিফাত প্রকাশের মধ্যদিয়ে অসংখ্য-অগনিত পাপী বান্দাদের সকল পাপ মুছন করে দিয়ে তাদেরকে ক্ষমাপ্রাপ্ত বান্দাদের কাতারে শামিল করাবেন। ক্ষমা পাওয়ার জন্য আল্লাহ তাআলা আমাদের জন্য রমজানুল মোবারককে স্পেশাল নেয়ামত আর সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে দান করেছেন। এই দশকের মধ্যে আমাদের অতীত পাপ কর্মের জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। এ জন্য অনুশোচনায় মাথা নত করি সেজদার মাধ্যমে।

নামাজের বাইরে যখনই আনন্দদায়ক কিছু ঘটতো বা স্রষ্টার পক্ষ থেকে কুরআন শরীফে সেজদা করার কথা বলা হতো তখন রাসূল (সা.) কৃতজ্ঞতার সেজদা দিতেন। রাসূল (সা.) এর জীবনের প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল আল্লাহকে ভয় পেয়ে নয় বরং তাকে ভালবেসে ও তার অনুগ্রহের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের নিমিত্তে সেজদা করা।

পূর্ববর্তী নবী-রাসূল (সা.)গণ যেখানে ভয় ও অনুশোচনার মাধ্যমে স্রষ্টাকে পাওয়ার চেষ্টা করেছেন সেখানে বিশ্বজাহানের প্রতি রহমতস্বরূপ প্রেরিত হযরত মুহাম্মদ (সা.) শোকরিয়া ও স্রষ্টার করুণাময় রূপ উপলব্ধি করার মাধ্যমে মহাপ্রভূকে পাবার স্বর্ণপথের সন্ধান দিয়েছেন।

হযরত আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, সূরা সাদ তেলাওয়াত করার সময় রাসূল (সা.) সেজদা করলেন এবং বললেন, দাউদ অনুশোচনার সেজদা করতেন। আর আমি সেজদা করি কৃতজ্ঞতার। (তিরমিযি)

হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসূল (সা.) রাতে নামাজ পড়তে পড়তে তাঁর পা ফুলে যেত। আমি হযরতকে (সা.) বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (সা.) আপনি কেন এমন করেন আপনার আগের ও পরের সমস্ত গুণাহ আল্লাহ মাফ করে দিয়েছেন। রাসূল (সা.) জবাব দিলেন, আমি কি তার কৃতজ্ঞ বান্দা হব না?’ (বুখারী)

রাসূল (সা.) এর কাছে যখন এমন কোন সংবাদ আসত যা তাকে আনন্দিত করত বা এমন পরিস্থিতি দেখা দিত যেখানে তিনি আনন্দিত হতেন তখন তিনি মহান বরকতময় আল্লাহর শোকরিয়া আদায়স্বরূপ সিজদায় পড়ে যেতেন। (আবু দাউদ, তিরিমিযি, ইবনে মাযাহ)

তাই যখনই আপনার জীবনে মনপ্রাণ ছুঁয়ে যায়, প্রত্যাশার সীমানা ছাড়িয়ে যাওয়া আনন্দের সংবাদ আসে তখন ‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ’র বলে সেজদায় পড়ে যান, কৃতজ্ঞতার অশ্রুতে চেহারাকে ভিজিয়ে দিন। যখন রাত গভীর হয়ে যায়, ঝিঁঝি পোকার ডাক শোনা যায়, দূরে কোথাও একটানা পাখির ডাক কানে আসে, তারাগুলো মিট মিট করে জ্বলতে থাকে, গাছগুলো দাঁড়ানো অবস্থায় স্রষ্টার প্রশংসায় মত্ত হয়- তখন প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে যান। আপনিও জেগে উঠে কৃতজ্ঞতার সেজদায় পড়ে যান, করুণাময়কে অনুভব করুন অন্তরের চেয়েও কাছে আরও কাছে। নিস্তব্ধ অন্ধকার ভেদ করে আসা স্রষ্টার রহমতের জ্যোতির্ময় করুণাধারায় ভাসতে থাকুন কলোত্তীর্ণ সীমানায়।

‘আপনার পালনকর্তার প্রশংসা, পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের পূর্বে। তার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন রাত্রির একাংশে ও নামাজের পরে।’ (সূরা ক্বাফ ৫০/৪০)

 

জিএসনিউজ/এমএইচএম/এএএন

আপনার মতামত লিখুন :