বাংলাদেশে অণুবীক্ষণ যন্ত্র কি কাজে ব্যবহার করা হয় ?
প্রকাশিত : ০৫:২৮ পিএম. ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

কখনো কি আপনার মনে হয়েছে যে, অণুবীক্ষণ যন্ত্র ঠিক কি কি কাজে ব্যবহার করা হয়? যদি না মনে হয়ে থাকে তাহলে আজকের লেখায় এই সবকিছু সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জেনে যাবেন। অণুবীক্ষণ যন্ত্র মূলত অণুজীব বিজ্ঞান পরীক্ষাগারের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র। এই যন্ত্রের সাহায্যে আপনি অতি সহজেই কোনো বস্তুকে প্রায়ই ১০০ থেকে ৪০ লক্ষ গুণ পযর্ন্ত বড় করে দেখতে পারবেন। যে বিষয়ে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের গঠন ও কার্যপ্রণালী আলোচনা করা হয়ে থাকে, তাকে মাইক্রোস্কোপিক যন্ত্র বলা হয়ে থাকে। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক এটি দিয়ে আপনি ঠিক কি কি কাজ করে ফেলতে পারবেন।
-
ঠিক যেসব কাজে অনুবীক্ষণিক যন্ত্র ব্যবহার করা হয়ে থাকে
অনুবীক্ষণিক যন্ত্র মূলত বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণা কাজে ব্যবহার করে থাকেন। নিচে এদেরকে আপনি ঠিক যেসব কাজে ব্যবহার করবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
- যে কোনো বস্তুর স্পষ্টত ছবি তোলা
অনুবীক্ষণিক যন্ত্রের প্রধান এবং অন্যতম কাজ’ই হচ্ছে যে কোনো বস্তুর স্পষ্টত ছবি তোলা। কারণ, অনুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে রেখে আপনি সমস্ত ধরনের ছবির ক্রিস্টাল ক্লিন ছবি তুলতে পারবেন। শুধু তাই নয়, এটি আপনাকে ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর ছবির সমস্ত এ্যাঙ্গেলের ছবি তুলে দিতে পারবেন।
- যে কোন ধরনের নতুন জীবাণুর ধরণ নির্ণয়ে
অনুবীক্ষণ যন্ত্র মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে। একটি আলোক অনুবীক্ষণ, অন্যটি ইলেকট্রনিক অনুবীক্ষণ যন্ত্র। আলোক অনুবীক্ষণ যন্ত্র মূলত একটি অপটিক্যাল যন্ত্র যা আলো ব্যবহার করে বস্তুর বিবর্ধিত চিত্র তৈরি করে থাকে। এই যন্ত্রটিতে সাধারণত দুই ধরনের লেন্স থাকে। একটি হচ্ছে অভিনেত্রী লেন্স এবং অন্যটি হচ্ছে অভিলক্ষ্য লেন্স। অভিনেত্রী লেন্স পারতপক্ষে একটি ছোট চিত্র তৈরি করে যা অভিলক্ষ্য লেন্স দিয়ে আরও বৃহত্তর থেকে বৃহত্তর করা হয়ে থাকে। আলোক অনুবীক্ষণ যন্ত্রের সর্বোচ্চ বিবর্ধন সাধারণত ১০০০x পযর্ন্ত হয়। যে কোন ধরনের নতুন জীবাণুর ধরণ নির্ণয়ে এটি একটি বেস্ট পদ্ধতি। কেননা, এই পদ্ধতিটির মাধ্যমে আপনি একটি জীবাণুর গঠনপ্রকৃতি থেকে শুরু করে, ক্ষুদ্রাতি-ক্ষুদ্র সমস্ত ধরনের নাড়িনক্ষত্র নির্ণয় করতে সক্ষম হবেন।
- বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈজ্ঞানিক গবেষণাগারে
বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈজ্ঞানিক গবেষণাগারে অণুবীক্ষণ যন্ত্র বেশি বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এটি দিয়ে সাধারণত উচ্চতর স্নাতক ডিগ্রীধারী, পিএইচডি গবেষকগণ বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈজ্ঞানিক গবেষণাগারে এ সমস্ত যন্ত্র দিয়ে অজানা সব ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া সহ নতুন নতুন রোগের জীবাণু শনাক্ত করতে সক্ষম হয়ে থাকেন। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে একটি ভালো মানের অণুবীক্ষণিক যন্ত্র থাকা মানেই হচ্ছে এটি দিয়ে উন্নত বিশ্বের শিক্ষার্থীরা তাদের গবেষণার পরিধিকে আরও ত্বরান্বিত এবং বর্ধিত করে থাকেন।
- জীবাণুবাহিত রোগের গবেষণায়
ইলেকট্রনিক অনুবীক্ষণ যন্ত্র মূলত জীবাণুবাহিত রোগের গবেষণায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বিশেষ করে, ট্রান্সমিশন ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ রশ্মি আকারে সরাসরি লক্ষ্যবস্তুর উপর নিক্ষেপ করা হয়ে থাকে। ফলে, এটি দিয়ে যে কোন জীবাণুর উপরে ফেলা লক্ষ্যবস্তুর ছবি স্পষ্টত তুলতে পারবেন এবং তা থেকে জীবাণুকে শনাক্তও করতে পারবেন।
মন্তব্য
অনুবীক্ষণ যন্ত্র পারতপক্ষে আমাদের বৈজ্ঞানিক গবেষণায় অনেক ধরনের কাজে লাগে। এজন্যে সাধারণত স্কুল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ, বড় বড় প্রতিষ্ঠানের গবেষণাগারে অনুবীক্ষণ যন্ত্র ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ব্যবহারের ধরণ অনুযায়ী অনুবীক্ষণ যন্ত্রের দাম কম বা বেশি হয়ে থাকে। বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজে ব্যবহৃত অনুবীক্ষণ যন্ত্রের দাম তুলনামূলক ভাবে বেশি হতে পারে। অনুবীক্ষণ যন্ত্রের অনেক ধরন রয়েছে এগুলো সাধারণত কাজের ধরনের উপর ভিত্তি করে ক্রয় করতে হয়।