সোনাগাজীর প্রাথমিকে শিক্ষক সংকট প্রকট, পাঠদান ব্যাহত

নিজস্ব প্রতিবেদকনিজস্ব প্রতিবেদক
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১১:৪৬ এএম, ২৩ জানুয়ারি ২০২০

৫ জনের কম শিক্ষক দিয়ে ১ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কোন ভাবেই সম্ভব না হলেও সোনাগাজীর প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ৫ জনেরও কম শিক্ষক দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে।
সোনাগাজী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে,সোনাগাজীতে ১১০টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে এর মধ্যে প্রায় ৪০ টির মত বিদ্যালয় ৫ জনেরও কম শিক্ষক দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। বিভিন্ন বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে ১৪০টি
সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
তবে সোনাগাজীর প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও হাজীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন শিক্ষক সংকটের জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সম্বনয়হীনতা, শিক্ষক নিয়োগ ও বদলিতে স্থানীয় প্রভাবশলীদের তদবিরকে দায়ী করেন । তিনি সোনাগাজী উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার দীর্ঘ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ।
হাজীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিনের স্টাটাসটি জিএসনিউজ পাঠকদের জন্য হুবুহু তুলে ধরা হলো।

৫ জনের কম শিক্ষক দিয়ে ১ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কোন ভাবেই সম্ভব না হলেও দেশের হাজার হাজার বিদ্যালয় ৫ জনের কম শিক্ষক দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। সোনাগাজী উপজেলার ১১০টি সপ্রাবি এর মধ্যে প্রায় ৪০ টির মত বিদ্যালয় ৫ জনের কম শিক্ষক দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। সোনাগাজীতে প্রায় ১৪০ জনের মতো শূন্যপদ থাকলেও ছাত্রঃশিক্ষক= ৪০ঃ১ অনুপাতে কিন্তু শিক্ষক শুন্যতা তত প্রকট নয়। তথাপিও ৫ জনের কম শিক্ষক বিশিষ্ট বিদ্যালয়ের সংখ্যা প্রায় অর্ধেকের মত কেন??? এর সঠিক উত্তর হল শিক্ষক সমন্বয়ের অভাব এবং শিক্ষক নিয়োগ ও বদলীর ক্ষেত্রে বেশী শিক্ষক বিশিষ্ট বিদ্যালয়/ পাকা রাস্তার পাশের বিদ্যালয়/ বড় হাট-বাজার বিশিষ্ট বিদ্যালয়ে নিয়োগ বা পোস্টিং পাওয়ার অসম তদবির।

কেস স্টাডি-১,
কিছু বিদ্যালয়ে ৩০০/৩৫০ শিক্ষার্থী এবং ১২/১৩ জন শিক্ষকের পদ বিদ্যমান/ কিছু বিদ্যালয়ে ২০০/২৫০ শিক্ষার্থী এবং ৯/১০ জন শিক্ষকের পদ বিদ্যমান এবং যোগাযোগ সুবিধা ভালো বা শিক্ষক অনুপাতে শ্রেনী কক্ষ কম হলে অতিরিক্ত শিক্ষকেরা অলস সময় কাটানোর সুযোগ পাবে বা ক্লাস/পিরিয়ড কম নিতে পারবে বা কর্মঘন্টা কম হবে ইত্যাদি ইত্যাদি সুবিধা।
ঐ সকল বিদ্যালয়ে ১ টি করে শূন্যপদ বিদ্যামান। ধরুন চলমান নিয়োগ/বদলী প্রক্রিয়ায় ঐ সকল বিদ্যালয়ের ঐ ১ টি শূন্যপদে নিয়োগ/বদলী/পদায়ন পেতে গড়ে ১০/১৫ বা ২০ জনও আগ্রহী বা আবেদনকারী, যার কারনে নিয়োগ বা বদলীকারি কর্তৃপক্ষ অনেক সময় চরম বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হয়ে পড়েন। তার সাথে আছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের তদবীর বা সুপারিশ,,,।
এ অসম প্রতিযোগীতার একমাত্র সমাধান হল ছাত্র শিক্ষক অনুপাত কম হলে ঐ বিদ্যালয়ে শূন্যপদ থাকলেও ঐ পদের অনুকুলে বদলী বা নিয়োগ না দেওয়া। তবেই ৫ জনের কম শিক্ষক বিশিষ্ট বিদ্যালয়ের সংখ্যা কমে আসবে এবং বিদ্যালয় সমুহে পাঠদানের কর্মঘন্টার নুন্যতম সমাধান হবে বলে আশা করা যায়।

কেস স্টাডি-২
অপর দিকে ৫ জনের কম শিক্ষক বিশিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা দৈনিক ৮-৯ টা ক্লাস বা পিরিয়ড নিতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছে নিয়মিত এবং ঐ সকল বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শিক্ষক থেকে তাদের ন্যায্য প্রাপ্তিতে বঞ্চিত হচ্ছে। অভিভাবকেরা ক্ষিপ্ত হচ্ছে বা অসন্তোষ প্রকাশ করছে ইত্যাদি।
৫ জনের কম শিক্ষক কর্মরত বিশিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা আওয়াজ দিন যাতে চলমান নিয়োগ বা বদলী প্রক্রিয়ায় এ বিশাল ব্যাবধানগত সমস্যার সমাধান হয়।
বিদ্যালয় ও উপজেলার নাম এবং কর্মরত শিক্ষকের সংখ্যা উল্লেখ করলে আমাদের মাননীয় উর্ধতন কর্তৃপক্ষের বিষয়টি অবগতি ও কার্যক্রম গ্রহনে সহজ হবে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মিশন ” সবার জন্য মান সম্মত শিক্ষা” এর সফলতা আসবে।

জিএসনিউজ/এমএইচএম/এমএআই

আপনার মতামত লিখুন :