মুসলিম-বৌদ্ধ দাঙ্গার পর জরুরি অবস্থা জারি শ্রীলংকায়

GS News 24GS News 24
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৪:২৮ পিএম, ০৭ মার্চ ২০১৮

স্টাফ রিপোর্টারঃ>>>

গোটা শ্রীলংকায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে সে দেশের সরকার। স্থানীয় সংখ্যালঘু মুসলিম ও সংখ্যাগুরু বৌদ্ধ সিংহলী জনতার মধ্যে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ার কারনে এ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে কলম্বো। দাঙ্গায় এখন পর্যন্ত দুজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। তামিল বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে কয়েক দশকের গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর এবারই প্রথম দেশজুড়ে জরুরি অবস্থার ঘোষণা দিল কলম্বো।

 

প্রাথমিকভাবে ১০ দিনের জন্য এ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে শ্রীলংকান সরকার। দেশটির নগর পরিকল্পনামন্ত্রী রউফ হাকিম বলেন, ‘মন্ত্রিসভা গোটা শ্রীলংকায় ১০ দিনের জরুরি অবস্থা ঘোষণার পাশাপাশি দাঙ্গাকারীদের বিরুদ্ধে শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে্ন।’ অবস্থা স্বাভাবিক রাখতে যে কোন পদপক্ষেপ নেওয়া হবে

 

১০ দিনের অতিরিক্ত সময়ের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে গেলে সে দেশের জাতীয় সংসদের অনুমোদন লাগবে বলে জানিয়েছেন শ্রীলংকার সহাবস্থানমন্ত্রী মানো গানেসান। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় দাঙ্গা আরো বেশী ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা চাই না সারা দেশে জাতিগত বিরোধ ও বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ুক।’এবং দেশে কোন খারাপ অবস্থা আসুক।

 

শ্রীলংকার ক্যান্ডি শহরে সম্প্রতি দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ধর্মীয় বিদ্বেষ ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। গত বছর থেকেই সেখানে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। স্থানীয় মুসলমানদের বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন ধরেই জোরপূর্বক ধর্মান্তর ও প্রত্নতাত্ত্বিক বৌদ্ধ স্থাপনায় ভাংচুরের অভিযোগ তোলা হচ্ছে। সম্প্রতি এলাকাটিতে অগ্নিসংযোগ ও দাঙ্গার ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটে চলছে। সর্বশেষ গত মাসেও সেখানে মুসলিম মালিকানাধীন দোকানপাটে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

 

স্থানীয় সূত্র জানায়, ক্যান্ডির দিগানা এলাকায় কয়েকজন মুসলিমের বিরুদ্ধে সংখ্যাগুরু সিংহলী সম্প্রদায়ের একজনকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠার পর মুসলিম মালিকানাধীন কয়েকটি দোকান ও বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হয়। গতকাল সকালে জ্বলন্ত এক বাড়ির নিচ থেকে মুসলিম ধর্মাবলম্বী ২৪ বছরের এক তরুণের মরদেহ উদ্ধারের পর এ দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সহিংসতার মাত্রা  আরও বেড়ে যায়।

 

অভিযোগ রয়েছে, শ্রীলংকার একটি চরমপন্থী বৌদ্ধ দলের কয়েকজন নেতাকে সম্প্রতি ধর্মীয় বিদ্বেষে উসকানি দেয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মুক্ত করতে ওই দলের কয়েকজন ভিক্ষু বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে ওই এলাকায় যাওয়ার পর থেকে সহিংসতার তীব্রতা বাড়ছে। ভিক্ষুরা অভিযুক্তদের মুক্ত করতে না পারলেও তারা সেখানে যাওয়ার পর থেকেই এলাকাটিতে সহিংসতার মাত্রা বাড়তে শুরু করে। এসব ভিক্ষুর বিরুদ্ধে আগেও বারবার ধর্মীয় সহিংসতায় উসকানি দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

 

পর্যটন শিল্পের জন্য বিখ্যাত অঞ্চলটিতে বর্তমানে ভারী অস্ত্রসজ্জিত পুলিশ কমান্ডো মোতায়েন করেছে শ্রীলংকা সরকার। রাতে কারফিউ উপেক্ষা করে কয়েক দাঙ্গাকারী ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগে মত্ত হয়ে উঠলে তাদের ঠেকাতে কমান্ডো মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয় স্থানীয় প্রশাসন।

 

এর আগে সোমবার শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে বলেন, শহরটিতে যে পদ্ধতিগত ও সংগঠিত প্রয়াসের মাধ্যমে সহিংসতা ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে, তা বোঝা যাচ্ছে এবং সরকার এর বিরুদ্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে।

 

খবর গার্ডিয়ান

আপনার মতামত লিখুন :