এখনই বলা কঠিন নির্বাচনের সুযোগ নেই খালেদার

GS News 24GS News 24
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৯:৫৫ এএম, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

স্টাফ রিপোর্টারঃ>>>

দুদকের দায়ের করা মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষণা করার পর গত ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যালোচনাসহ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন বিশেষ জজ-৫ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান।

এতে বেগম জিয়াকে ৫ এবং তারেক রহমানসহ বাকি আসামিদের ১০ বছর করে কারাদণ্ড ও ট্রাস্টের নামে আত্মসাৎ হওয়া ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা প্রত্যেককে সমপরিমাণ করে জরিমানা করা হয়েছে।

এর পরের দিন ২০ ফেব্রুয়ারি রায়ের সত্যায়িত কপি নিয়ে হাইকোর্টে্র সাজার বিরুদ্ধে আপিল করেছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। একাধিক গ্রাউন্ডে যুক্তি তুলে ধরে তার খালাস এবং জামিন আবেদন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আপিল গ্রহণ করে বিচারিক আদালতে খালেদা জিয়াকে করা অর্থদণ্ড স্থগিতের আদেশ দেন।

এবং একই সঙ্গে এ মামলায় বিচারিক আদালতের সকল প্রমান আগামী ১৫ দিনের মধ্যে হাইকোর্টে পাঠাতে সংশ্লিষ্ট আদালতকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এছাড়া আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় জামিন চেয়ে খালেদা জিয়ার করা আবেদনে আগামী রোববার শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।

দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার সাজার পরই আগামী নির্বাচনে তার অংশগ্রহণ করতে পারা, না পারার বিষয়টি ঘুরে ফিরে সবার সামনে আসছে। রাজনৈতিক দলগুলোর বাইরেও সাধারণ মানুষের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে আদৌ কি তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন?

এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন জিএস নিউজকে বলেন, ‘এখন যে আবেদন করা হয়েছে, তাতে সাজা স্থগিত করা সম্ভব হয় না। পরে ভিন্ন আইন আছে, সেই অনুপাতে আবেদন করা হবে। একটা হলো যদি আপিল পেন্ডিং থাকে, তাহলে আবেদনের দরকার  পডে না।’

তিনি বলেন, ‘আপিল যদি পেন্ডিং থাকে নির্বাচনে বিএনপি নেত্রীর অংশগ্রহণে কোনো বাধা থাকবে না। আবার সাজা স্থগিত না হলে নির্বাচনে তিনি অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।’

খালেদা জিয়ার এই আইনজীবী জানান, আদালত জামিন আবেদনের শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন। মামলার প্রমান গুলো হাইকোর্টে জমা দিতে বলেছেন, এগুলো পেপার বুক হবে। শুনানির সময় নির্ধারণ করা হবে। তখন আমরা আইনগত সব বিষয় আদালতে তুলে ধরব। আইনি বিষয়ে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।

তিনি আরও বলেন, ‘সবকিছুই তো আর আইন অনুযায়ী চলবে না। তারপরও কথা আছে না ‘কেষ্ট বেটাই চোর’। সুতরাং খালেদা জিয়া নির্বাচনে থাকতে পারছেন কিনা, তা এখনই শেষ বলার সুযোগ আসেনি।’

 

 

এ প্রসঙ্গে খালেদা জিয়ার আইনজীবী আবদুর রেজাক খান জিএস নিউজকে বলেন, ‘জামিনের ওপর শুনানির জন্য আগামী রোববার দিন ধার্য হয়েছে। এর আগে কিছুই বলা যাচ্ছে না।’

খালেদা জিয়ার আইনজীবী সগীর হোসেন লিওন জানান, আমাদের পক্ষ থেকে বয়স, অসুস্থতাসহ প্রায় ৩২টি গ্রাউন্ডে ৪৫টি প্যারায় ৮৮০ পৃষ্ঠার জামিন আবেদন আদালতে জমা দেয়া হয়।

উল্লেখ্য, সেনা সমর্থিত সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

২০০৯ সালের ৫ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুন-অর রশিদ। মামলার দীর্ঘ পাঁচ বছর পর ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ খালেদা জিয়াসহ ছয় আসামির বিরুদ্ধে ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৪০৯ এবং দুদক আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ গঠন করে বিচারকাজ শুরু করা হয়।

এরপর ২৩৬ কার্যদিবসে, ৩২ জনের সাক্ষ্য নেয়ার মধ্য দিয়ে এ মামলার কার্যক্রম শেষ করা হয়। এর মধ্যে ২৮ দিন যাবত আসামি খালেদা জিয়া ৩৪২ ধারায় জবানবন্দি দেন। আর ১৬ দিন তার পক্ষ থেকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন আইনজীবীরা।

তারেক রহমান ছাড়া মামলায় অন্য আসামিদের মধ্যে মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ কারাগারে রয়েছেন। আর সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক রয়েছেন।

আপনার মতামত লিখুন :