অসামাজিক কাজে জড়িত থাকার অপবাদ নিয়েই চলে গেল সূচনা

স্কুলছাত্রী সূচনা খাতুন (১৭)। রাজশাহীর পুঠিয়ার একটি স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল সে। হঠাৎ তার বিরুদ্ধে অসামাজিক কাজে জড়িত থাকার অপবাদ ওঠে। এই অভিযোগে থানার হাজতবাসে পর্যন্ত তাকে যেতে হয়েছে। অবশেষে সূচনা রাগে ক্ষোভে অপবাদ মাথায় নিয়ে চিরতরে চলে যায়।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ের নাখালপাড়ায় খালার বাসায় এসে সাততলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করে সূচনা। গত শনিবার রাতে সে ভবনের ছাদ থেকে লাফ দেয়। গতকাল সকালে স্থানীয় একটি কিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সূচনা মারা যায়।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্র জানায়, সূচনা খাতুন পুঠিয়া পৌর সদর এলাকার কালীতলার বাসিন্দা সাইফুলের মেয়ে। পরিবারের দাবি, অসামাজিক কাজের অভিযোগে পুলিশ সূচনাকে আটক করে জেলহাজতে পাঠায়। পরে জামিনে বেরিয়ে ঢাকায় গিয়ে আত্মহত্যা করে।
সূচনার দাদা অলিউর রহমান অভিযোগ করেন, গত বৃহস্পতিবার রাতে তার বাড়িতে অসামাজিক কাজ হয়, এমন কথা বলে তার নাতনি সূচনাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। সে সময় সন্দেহজনকভাবে আরো দুই যুবককেও আটক করে পুলিশ। পরদিন শুক্রবার দুপুরে আটককৃতদের আদালতে প্রেরণ করা হয়। ওই দিন আদালতে জামিনের আবেদন করলে আদালত তার নাতনিকে জামিন দেন। জামিনে বাড়ি আসার পর লজ্জায় নাতনি ও পুত্রবধূ গত শনিবার সকালে ঢাকার তেজগাঁওয়ের পূর্ব নাখালপাড়ায় বোনের বাড়িতে চলে যায়।
সূচনার খালা আফিয়া বেগম জানান, তার বোন তার দুই মেয়েকে নিয়ে গত শনিবার বিকেলে তার বাসায় আসে। রাত ৯টার দিকে সূচনা সাততলা ভবনের ছাদ থেকে লাফ দেয়। এতে সে গুরুতর আহত হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে তেজগাঁও শিল্প এলাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় সে মারা যায়।
তেজগাঁও থানা পুলিশ জানিয়েছে, পোস্টমর্টেম না করেই পরিবারের লোকজন মেয়েটির লাশ পুঠিয়ায় নিয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে পুঠিয়া থানার ওসি সায়েদুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। পরে দুই যুবকসহ ওই মেয়েকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করি। এ বিষয়ে থানায় একটি মামলা হয়েছে। সূচনার আত্মহত্যার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই মেয়েটি মারা গেছে কি না সেটি আমার জানা নেই। এলাকার লোকজনের অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ মেয়েটিকে আটক করেছিল বলে দাবি করেন তিনি।
এ ব্যাপারে পুঠিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক আব্দুস সাত্তার বলেন, সূচনা আমাদের বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল বিভাগ থেকে এ বছর এসএসসি পরীার্থী ছিল। শারীরিক অসুস্থতার কারণে সে কয়েকটি পরীক্ষা দিতে পারেনি।