সাইফুজ্জামান শিখরের আত্মীয় পরিচয়ে শ্বশুরের ৪০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ

বিশেষ প্রতিনিধি:>>>
কোথাও তার পরিচয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর ভাতিজা, কোথাও তিনি পরিচয় দেন প্রধানমন্ত্রীর একান্ত ব্যাক্তিগত সহকারী সচিব সাইফুজ্জামান শিখরের চাচাতো ভাই! এই পরিচয় দিয়েই বিয়ে করেছেন অতঃপর নিজ শ্বশুর এর সাথে প্রতারণা করে বিভিন্ন মেয়াদে হাতিয়ে নিয়েছেন চল্লিশ লক্ষ(৪০,০০০০০) টাকা! পুরো নাম- মোঃ শোয়েব আনোয়ার(২৭),পিতা-মৃত আবু জাফর, মাতা-আফরোজা খাতুন(৪৫)।
নিজ পরিবারের সাথে স্বামীর প্রতারণার কথা বলছিলেন, একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় এর আইন বিভাগ থেকে সদ্য স্নাতক পাশ করা নুজহাত যারিন সঞ্চিতা(২৬)।
গত ৯/৭/ ২০১৫ সালে পারিবারিক সম্মতিক্রমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন মোঃ শোয়েব আনোয়ার এর সাথে আর এই ২ বছরেই শারীরিক,মানসিকভাবে নির্যাতনের শিকারই তিনি হননি! তার পরিবার কে অর্থনৈতিক ভাবেও শেষ করে দিয়েছে এই প্রতারক জামাই। যদিও বা বিয়ের পরে তার বক্তব্য ছিল সে শিখরের চাচাতো ভাই এর খুব ঘনিষ্ট লোক।
বিয়ের পর ঘরজামাই থেকে যারিনের পিতার অর্থাৎ শ্বশুর এর (এন,জি,ও) নাম-(DESA) তে কোষাধ্যক্ষ পদে যোগদান করে শোয়েব আনোয়ার, এর পর শুরু তার প্রতারণার গল্প। এন,জি,ও এর আই,এস,পি ও আই,সিটি লাইসেন্স বাবদ শ্বশুর এর কাছ থেকে প্রথমে নিয়েছিল ৩ লক্ষ টাকা। যে লাইসেন্স প্রদান করেন তার নম্বর যথাক্রমে- (ISP Nation wide- 450)ও ICT-DMCC-31770।
এখানেই শেষ নয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে ১৫০ কোটি টাকার শিক্ষা প্রজেক্ট দেওয়া হবে এই প্রতিশ্রুতিতে প্রকল্প প্রস্তাবনা,কনসাল্টেন্ট ফি,প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে অনুমোদন ও এনজিও এর বুর্যো লাইসেন্স বাবদ আরও খরচের নানা ক্ষাত এর বাহানা করে ও সাইফুজ্জামান শিখরের কথা বলে হাতিয়ে নেয় পর্যায়ক্রমে ৩৩ লক্ষ টাকা, ধাপে ধাপে সর্বমোট ৪০ লক্ষ টাকা আত্নসাৎ করেছে প্রতারক শোয়েব, এই কথা নিজের মেয়ে জামাই হিসাবে সরল বিশ্বাসে এত টাকা দিয়েছিলেন যেরিন এর পিতা সাজেদুল আলম হতাশার সাথে কন্ঠ৭১ কে জানান।

সাইফুজ্জামান শিখরের পরিচয় দিয়ে shekhar887493@gmail.com ইমেইল আইডি থেকে যোগাযোগ করা হয়।
এই ঘটনায় শোয়েব এর নামে ঝিনাইদহ জজ কোট এ প্রতারণা মামলা চলমান রয়েছে বলে জানা যায়।
প্রতারক ও বিশ্বাসঘাতক জামাই আখ্যায়িত করে সাজেদুল আলম বলেন, shekhar887493@gmail.com ইমেইল আইডি থেকে সাইফুজ্জামান শিখরের পরিচয় দিয়ে যোগাযোগ করে বিভিন্ন সময়ে টাকা চেয়ে আসছিলেন, এবং এই আইডি ব্যাবহার ছাড়াও অপরিচিত নম্বর থেকে শিখর হিসাবে টাকা চাওয়া ছাড়াও দেখা করার কথা বলেও দেখা করেন নাই।
লক্ষ লক্ষ টাকা আত্নস্যাৎ করেই শুধু নয়, আমার মেয়েকে শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন করেছে শোয়েব, এইসব আস্তে আস্তে ফাঁস হতে থাকলেই মানুষিক ভাবে ও শারীরিক নির্যাতন করেছেন শোয়েব ও তার পরিবারের সদস্যরা। এছাড়াও শোয়েব এর মা আফরোজা খাতুন বিভিন্নভাবে হুমকী এখনো দিয়ে আসছেন বলে জানান, এই ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে, গত ৮/১২/২০১৭ তারিকে মামলা নম্বর- ৬৩৬/১৭ মামলা হলেও পুলিশ প্রশাসন এখনো শোয়েবকে আইনের আওতায় আনতে পার নাই বলে জানান, যেরিনের মা নাজমা পারভীন(৪৮)
স্কুল কলেজ ও নানী বাড়ি ঝিনাইদহ হবার সুবাদে স্থায়ী ভাবে ঝিনাইদহে দীর্ঘদিন বসবাস করেছে কিন্তু পৈত্রিক বাড়ি মাগুরা বেলনগর হওয়ার সুবাদে সাইফুজ্জামান শিখর এর চাচাতো ভাই হিসাবে পরিচয় দিতেন সর্বত্র। তবে মামলার ব্যাপারে আইন বিষয়ে স্নাতক করা নুজহাত জেরিন আক্ষেপ করে বলেন, উল্টো আমাদের নামে শোয়েব এর পরিবার মামলা দিয়েছে! এছাড়াও নিজে একজন আইনজীবী হওয়া সত্বেও প্রাপ্য বিচার আইনী সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি!
এই ব্যাপারে শোয়েব এর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে, তার মুঠো ফোন সুইচ বন্ধ পাওয়া যায়, পরে ৩ নং ঝিনাইদহ ট্যাংকি পাড়া তার বাড়ীর ঠিকানায় তার কোন উপস্থিতি পাওয়া যায়নি, এই ঘটনায় শোয়েব এর মা আফরোজা খাতুন এর সাথে দেখা করে এই প্রতারনার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমার ছেলেকে চাকরী ও বিয়ের আগে আমি কিছু টাকা ধারদেনা ছিলাম, সেই টাকা পরিশোধ করার কথা ছিল মেয়ের পরিবারের! কিন্তু তারা তার কিছুই করেন নাই, এই প্রসঙ্গে আপনি কি আপনার ছেলেকে বিক্রি করে দিয়েছিলেন না এটি যৌতুক এমন প্রশ্নে তিনি কোন উত্তর ই দিতে পারেন নাই! আপনার ছেলে কোথায় এই প্রশ্নে জানান, আমার ছেলে ঢাকায় চাকরী করছে একটি (আই,টি) ফার্মে কিন্তু কোন আইটি ফার্ম তা তিনি জানাতে পারেননি।
ঝিনাইদহ সদর থানার এস,আই (আবুল কাশেম) এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে ও মামলার অভিযুক্তকে কেন আইনের হাতে সোপার্দ করা সম্ভব হচ্ছে না, এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, সে বর্তমানে ঝিনাইদহে নেই! তার বাড়িতে আমরা আগেও তল্লাশী চালিয়েছে কিন্তু তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি!
অথচ এই শোয়েব কে খুঁজতে অনুসন্ধানে নেমে তার অবস্থান সম্পর্কে জানা যায়, সার্কিট হাউজ পাড়া সংলগ্ন একটি মোটর গ্যারেজে তার নিয়মিত আনাগোনা আছে, এই ব্যাপারে গ্যারেজ মালিক মোঃ জনি কে শোয়েব শেষ কবে এসেছিলেন, এই প্রশ্নে তিনি জানান, গত পরশুদিন সে সকালে এখানে এসেছিলেন।
এই প্রতারণামূলক ঘটনার প্রেক্ষিতে ও প্রধানমন্ত্রীর একান্ত ব্যাক্তিগত সচিব সাইফুজ্জামান শিখর এর ব্যাক্তিগত সহকারী (পিএ) শাহিনুর রহমান এর সাথে যোগাযোগ করে জানানো হলে তিনি বলেন, মোঃ শোয়েব আনোয়ার নামে কোন আত্মীয় আছেন কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, সাইফুজ্জামান শিখর এর আত্নীয় হিসাবে এই নামের কোন ব্যাক্তি নাই, shekhar887493@gmail.com এই মেইল একাউন্ট কি সাইফুজ্জামান শিখর আদৌ ব্যাবহার করতেন এই প্রশ্নে একবারেই না সূচক জবাব দেন। এছাড়াও তিনি বলেন, তার নাম ভাঙ্গিয়ে যে বা যারা প্রতারণা করছেন তাদের পরিচয় দেন,আমরাও আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
এই ঘটনা জানাতে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান এর সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হয়। কথা পর্যায়ে তিনি তদন্ত অফিসার কে তা জানতে চান, ও উক্ত মামলার ব্যাপারে অবহিত করা হয়েছে।