ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছিল বুলেট বাহিনী

জিএস নিউজ রির্পোট:>>>
মেহেদী হাসান সৈকত ওরফে জুয়েল মুন্সি ওরফে বুলেট। তিনি একজন পেশাদার সন্ত্রাসী। গুলি করে ছিনতাই করা এ গ্রুপের আরেকটি বৈশিষ্ট্য। গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের গোলাপপুর গ্রামে জন্ম নেয়া বুলেট রাজধানীর তেজগাঁও রেলওয়ে কলোনির এল-টাইপ বাসায় থাকেন।
কন্ট্রাক্ট কিলার দুর্ধর্ষ এ সন্ত্রাসীর নেতৃত্বে গ্রুপটি বেশকিছু দিন ধরেই রাজধানীতে সক্রিয়। সব সময় তার সঙ্গে অস্ত্র ও গুলি থাকার কারণে তিনি সহযোগীদের কাছে বুলেট হিসেবেই পরিচিত। রাজধানীর তেজগাঁও এবং কারওয়ান বাজার এলাকায় বুলেট বাহিনীর অসম্ভব দাপট।
সবশেষ আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলের ক্যাডার হিসেবে কাজ করার পরিকল্পনা পাকা করেছিল গ্রুপটি। প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করতে বড় অঙ্কে ভাড়ায় খাটার সব প্রস্তুতিও নিচ্ছিল। পুলিশও এ গ্রুপটিকে ধরতে পারছিল না। শেষ পর্যন্ত পুলিশেরই পাতা ফাঁদে পা দিয়ে মো. রুবেল নামের এক সঙ্গীসহ বুলেট ধরা পড়ে এখন পুলিশ হেফাজতে।
চাঁদপুর সদরের হাপানিয়া গ্রামের বাসিন্দা রুবেল থাকেন রাজধানীর তেজকুনিপাড়ার কারখানা গলিতে। গ্রেফতারের সময় বুলেট ও রুবেলের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে অস্ত্র ও গুলি। গ্রেফতারকৃত দু’জনই এখন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) হেফাজতে আছে। ডিবির সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এ নিয়ে কথা হয় ডিবির সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) শাহাদাৎ হোসেন সুমার সঙ্গে তিনি জিএস নিউজকে বলেন, বুলেট মূলত শুটার। রুবেল ছাড়াও সাইফুলসহ তার আরও কয়েকজন সহযোগী রয়েছে। সহযোগীদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, বুলেট বাহিনীর সদস্যদের ধরতে বেশ কিছুদিন ধরেই চেষ্টা চলছিল। একাধিকবার ডিবির অভিযান ব্যর্থ হয়েছে। শেষ পর্যন্ত তাকে ধরতে মোবাইল চুরির গল্পের পাতা হয়। আর এতেই সফলতা আসে। ডিবির সিনিয়র এসি শাহাদাৎ হোসেন সুমা বলেন, পরিচয় গোপন করে বৃহস্পতিবার ডিবির এসআই হাফিজুর রহমান বুলেটকে ফোন করেন। নিজেকে সাধারণ পাবলিক পরিচয় দিয়ে বুলেটকে হাফিজ বলেন, ‘আমি সরকারি চাকরি করি। তেজকুনিপাড়ায় থাকি। অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে আমার মোবাইলটি ছিনতাই হয়ে গেছে। ওই মোবাইলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট আছে। আমি জানতে পেরেছি, আপনাদের গ্রুপের সাইফুল নামের একজন মোবাইলটি ছিনতাই করেছে। অনেক কষ্টে আপনার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করেছি। আপনি যদি সাইফুলের কাছ থেকে আমার মোবাইলটি উদ্ধার করে দিতে পারেন, তাহলে আপনাকে পাঁচ হাজার টাকা পুরস্কার দেব।’
প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায় বুলেট। পরে বুলেট তার সহযোগী রুবেল ও অন্য একজনকে সঙ্গে নিয়ে হাফিজের সঙ্গে দেখা করতে এলে তাদেরকে অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেফতার করা হয়। তবে বুলেটের আরেক সহযোগী কৌশলে পালিয়ে যায়। কথা হয় মামলার বাদী এসআই হাফিজুর রহমানের সঙ্গে।
তিনি জিএস নিউজকে জানান, বৃহস্পতিবার রাতে তেজগাঁও পলিটেকনিক্যাল হলের পেছনে সেন্ট্রাল প্রেসের সামনে থেকে বুলেট এবং রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ওই সময় একটি শটগান, একটি রিভলবার, শটগানের ১০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
ওইদিন রাতেই তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় মামলা করা হয়। বৃহস্পতিবার তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পলাতক আসামিদের গ্রেফতার, অস্ত্র-গুলির উৎস উদ্ঘাটন এবং নির্বাচন ঘিরে তাদের কী ধরনের পরিকল্পনা ছিল- এসব বিষয়ে জানতে রিমান্ডে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানান এসআই হাফিজুর রহমান।