সোনাগাজীতে সবুজ হত্যার আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরাপেরা, নিহতের পরিবার হুমকির মুখে
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নুর হোসেন সবুজকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করেছিল এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। গত বছরের ১৭ এপ্রিল রাত আনুমানিক ৮ ঘটিকার সময় কারামতিয়া বাজারস্থ তিন রাস্তার মোড়ে নিহত সবুজের চায়ের দোকানে ঘটনাটি ঘটে। মর্মান্তিক এই ঘটনায় বিগত বছরের ১৯ এপ্রিল সবুজের পিতা সাহাব উদ্দিন বাদী হয়ে সাইফুল ইসলাম জুয়েলকে প্রধান আসামী করে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরো ৭-৮ জনকে আসামী করে সোনাগাজী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ১০। উল্লেখিত আসামীরা হল, সাইফুল ইসলাম জুয়েল (২০) পিতা-নুর আলাম মেম্বার, সালাউদ্দিন খোকন (৩০) পিতা- মোরশেদ আলম, নুর আলাম মেম্বার (৫৫), পিতা- মৃত সফিউল্যাহ, মোরশেদ আলম (৬০) পিতা- মৃত সফিউল্যাহ, সর্ব সাং- উত্তর চর সাহাভিকারী (নাদের বলি বাড়ী) মাসুদ (৩০) পিতা- মৃত নুরনবী, সাং- উত্তর চর সাহাভিকারী (নুর নবীর বাড়ি), সর্ব থানা- সোনাগাজী। জনি (২৫), পিতা- শাহজাহান, সাং- চর হাজারী, শোভন (২০) পিতা- মফিজ, সাং- রংমালা, সর্ব থানা- কোম্পানীগঞ্জ। সোহাগ (১৮)পিতা- মহিব উল্যাহ, সাইফুল ইসলাম (২০) পিতা-মানিক, সর্ব সাং-দক্ষিণ চর সাহাভিকারী, থানা- সোনাগাজী।
আলোচিত এই হত্যা মামলায় আসামীদের গ্রেফতার করতে প্রশাসনের উচ্চ মহল থেকে বারবার নির্দেশনা থাকলেও অদৃশ্য শক্তির কারণে আসামীরা গ্রেফতার হয় নি। আসামী গ্রেফতার করতে ব্যার্থ হওয়ায়, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বারবার পরিবর্তন করলেও এখনো আসামীদেরকে আইনের আওয়াতায় নেয়া হচ্ছে না বলে নিহত সবুজের পরিবারের অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে দীর্ঘ তদন্তের পর সোনাগাজী মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মেজবাহ উদ্দিন গত বছরের ৭ ডিসেম্বর মামলার চার্জসিট আদালতে প্রেরণ করেন। চার্জসিট অনুয়ায়ী উলেখিত ৯ আসামীর মধ্যে এজাহার নামীয় আসামী সাইফুল ইসলামকে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে কোন সাক্ষপ্রমাণ না পাওয়ায় তাহাকে অত্র মামলার আসামী থেকে অব্যাহতির জন্য বিজ্ঞ আদালতে প্রার্থনা করিলেন। অন্যদিকে অজ্ঞাতনামায় ৭-৮জন আসামীর মধ্যে কাউকে চার্জসিটে অর্ন্তভুক্ত না করায় হতাশায় ভুকছেন নিহতের পরিবার।
মামলার বাদী সাহাব উদ্দিন জানান, আমি হতদরিদ্র হওয়ার কারণে আমার ছেলে হত্যার সুষ্ঠ বিচার পাচ্চি না। দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও অপশক্তির কারণে প্রশাসন আসামীদেরকে আইনের আওতায় নিচ্ছেন না এবং মামলার সুষ্ঠ তদন্ত করা হয়নি। নিহত সবুজের পিতা আরো অভিযোগ করে বলেন, সবুজ হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী এলাকার চিহ্নিত সস্ত্রাসী হেদায়েত ও আইয়ুব আলী। কিন্তু তারা ক্ষমতাশালী হওয়ার কারণে বিভিন্ন মহলের চাপে আমরা তাদেরকে এজাহারভুক্ত আসামী করতে ব্যার্থ হয়েছি। ইতিমধ্যে হেদায়েত ও আইয়ুব আলী মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আমাকে ও আমার পুত্র বধু (সবুজের স্ত্রী), সবুজের শিশু সন্তান ইমরান, আমার ছোট ছেলে আরিপ কে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। সবুজের স্ত্রী রজিনা আক্তার বলেন, আমি ঘর থেকে বাহির হইলে পথে-ঘাটে আমাকে ইভটিজিং করে এবং কুপ্রস্তাব দেয়। রোজিনা আক্তার আরো অভিযোগ করে বলেন, মামলা প্রত্যাহার করে না নিলে আমার শিশু সন্তানকে তারা হত্যা করবে।
মামলার চার্জসিট সূত্রে জানাযায়, এজাহার নামীয় ৮নং আসামী সোহাগকে এবং ৩নং আসামী নুর আলম মেম্বারকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এবিষয়ে জানতে চাইলে সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ন কবীর জানান, আসামীদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। আশা করি দ্রুত তাদেরকে আইনের আওয়তায় আনা হবে।



