সংসদ ভেঙে দিয়ে সরকারের পদত্যাগ ও কেয়ারটেকার সরকার গঠনের দাবি জামায়াতের।

MD Aminul IslamMD Aminul Islam
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১১:৫৬ এএম, ২৫ অক্টোবর ২০১৮

স্টাফ রির্পোটারঃ>>>>>>

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে আট দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক সভা থেকে এই দাবি জানানো হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন দলটির আমির মকবুল আহমদ। সভায় দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বুধবার (২৪ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব কথা জানানো হয়।

দলটির সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ গভীর রাজনৈতিক সংকটে নিপতীত। অনেক আন্দোলন, সংগ্রামের মাধ্যমে প্রায় সকল দলের ঐক্যমতের ভিত্তিতে কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে সন্নিবেশিত হয়। কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থার অধীনে দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে জাতীয় সংসদের তিনটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। যা দেশে-বিদেশে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। এ ব্যবস্থার মাধ্যমে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং গণতন্ত্রের ধারা শুরু হয়। কিন্তু ওয়ান ইলেভেনের পর সেনা সমর্থিত কেয়ারটেকার সরকার দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার যে যাত্রা শুরু করে, তারই ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে। তারা ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থাটি বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে, যার ফলশ্রুতিতে দেশে রাজনৈতিক সংকটের সৃষ্টি হয়।’

এই সময় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান আট দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জাতি, ধর্ম, দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

দাবিগুলো হলো-

১.  অবিলম্বে সংসদ ভেঙে দিয়ে সরকারের পদত্যাগ ও কেয়ারটেকার সরকার গঠন করতে হবে।

২.  অবিলম্বে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও ইভিএম ভোটিং ব্যবস্থা চালুর ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে।

৩.  সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ২০ দলীয় জোটনেত্রী খালেদা জিয়াসহ বিরোধী দলের সব নেতাকর্মীকে নিঃশর্তভাবে মুক্তি দেওয়া ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

৪.  এখন থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত সকল রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখতে হবে। নতুন করে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা দেওয়া বন্ধ এবং রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার ও হয়রানি বন্ধ করতে হবে। কথিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সব কালা-কানুন বাতিল করতে হবে।

৫.  বিচারবিভাগের ওপর অবৈধ হস্তক্ষেপ বন্ধ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ প্রশাসনকে দলীয় প্রভাবমুক্ত করে ঢেলে সাজাতে হবে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।

৬.  কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের দাবি অবিলম্বে বাস্তবায়ন এবং তাদের ওপর হামলার ঘটনার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

৭.  রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গুম হওয়া নাগরিকদের অবিলম্বে তাদের পরিবারের কাছে ফেরত দিতে হবে এবং গুম-খুনের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার করতে হবে।

৮.  আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে থেকে এক সপ্তাহ পর পর্যন্ত বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সারাদেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।

সভা থেকে বলা হয়, সরকার তার নীল-নকশা অনুযায়ী নির্বাচনের আয়োজন করে পুনরায় ক্ষমতায় আসার লক্ষ্যে বিরোধী রাজনৈতিক দলসমূহকে হয়রানি করছে। মিথ্যা মামলা, গণ-গ্রেফতার চালানো হচ্ছে। এটা কোনও অবস্থাতেই নির্বাচনের পরিবেশ নয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি অধ্যাপক মো. তাসনিম আলম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের প্রমুখ।

 

আপনার মতামত লিখুন :