যে ৭ মহাবিপদ বিএনপির সামনে

MD Aminul IslamMD Aminul Islam
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১০:৪৬ এএম, ২১ জানুয়ারি ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ>>>>

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপর্যয়ই বিএনপির শেষ দুর্যোগ নয়। সামনে বিএনপির সামনে আসছে আরো অনেক বড় দুর্যোগ। সরকার বিএনপির প্রতি ন্যূনতম অনুকম্পা বা সহানুভূতি দেখাবে না বরং আরো কঠোর হবে। আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেছেন, বিএনপির জন্য সামনে আরো কঠিন সময় অপেক্ষা করছে।

সামনের দিনগুলোতে সরকারের যেসব পদক্ষেপগুলোতে সরাসরি আক্রান্ত হবে বিএনপি সেগুলো হলোঃ

নয়াপল্টনে প্রধান কার্যালয়ও অবৈধ

পুরাতন নথিপত্রে দেখা যায়, নয়াপল্টনে বিএনপির প্রধান কার্যালয়টিও বৈধ নয়। বিএনপি জনৈক রাজিয়া বেগমের কাছ থেকে এই বাড়িটি কিনে নিয়েছে। কিন্তু এই বাড়ি ক্রয়ে যথাযথ আইনী প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি বলে রাজউকের নথিতে দেখা যায়। তাছাড়া, রাজিয়া বেগমের উত্তরাধিকারীরা এই ভবন ফিরে পেতে নতুন করে আইনগত প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে জানা গেছে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এই ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছে।

 

গুলশানে চেয়ারপারসনের অফিসও উচ্ছেদ হচ্ছে

২০১৬ সালে হোলি আর্টিজানের ঘটনার পরই সিদ্ধান্তটি নেয়া হয়েছিল। সিদ্ধান্তটি ছিলো যে, গুলশান এলাকায় কোন রাজনৈতিক কার্যালয় থাকবে না। নির্বাচনের আগে সরকার ওই সিদ্ধান্তটি কার্যকর করতে পারেনি। কিন্তু এখন দ্রুত এই সিদ্ধান্তটি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর ফলে বিএনপি এই অফিসটি থেকেও উচ্ছেদ হবে।

বিএনপির সামনে এই সাত মহাবিপদ। এর ফলে, বিএনপির অস্তিত্বের সংকট আরও গভীর হবে। দল হিসেবে বিএনপির টিকে থাকাই হবে এক কঠিন পরীক্ষা।

জিয়ার কবর সরিয়ে ফেলা

জাতীয় সংসদে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর রয়েছে। জাতীয় সংসদের যে স্থাপত্য নকশা বিশ্বখ্যাত স্থপতি লুই কান করেছিলেন, সেই নকশায় এরকম কোন কবর বা মাজার ছিলো না। গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরকার পূর্ণ নকশাটি ঢাকায় নিয়ে আসে। নতুন সরকার লুই কানের নকশার বাস্তবায়ন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এই নকশায় যেহেতু কোন কবর বা মাজার নেই, তাই নতুন সংসদে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

আওয়ামী লীগের একটি সূত্র বলছে, সংসদের প্রথম অধিবেশনেই এ সংক্রান্ত প্রস্তাব উত্থাপিত হতে পারে। ওই প্রস্তাব পাশ হলে চন্দ্রিমা উদ্যান থেকে জিয়ার কবর সরিয়ে নেয়া হবে অন্যত্র। এই মাজার ঘিরেই বিএনপি তার রাজনৈতিক অস্তিত্বের জানান দেয়। মাজার সরিয়ে নিলে যেটি হবে বিএনপির জন্য এক বড় আঘাত।

তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনতে নতুন তৎপরতা

দুই মামলায় দণ্ডিত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এর মধ্যে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। ২০০৭ সাল থেকে লন্ডনে অবস্থানকারী তারেকের ব্যাপারে নতুন সরকার আরো কঠোর। যেকোন মূল্যে তাকে দেশে ফিরিয়ে তার দণ্ড কার্যকর করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

সরকারি সূত্রগুলো বলছে, চলতি বছরেই তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার সব ব্যবস্থা নেয়া হবে। দেশে এনে দণ্ড কার্যকর করা হলে বিএনপির অস্তিত্বের সংকট আরও গভীর হবে।

 

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি নেই

গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে খালেদা জিয়া ইতিমধ্যে দুটি মামলায় ১৭ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। আইনি লড়াইয়ে তার মুক্তির সম্ভাবনা ক্রমশ ফিঁকে হয়ে আসছে। বেগম জিয়ার পুরনো মামলাগুলো সচল হয়েছে। এগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিয়েছে নতুন সরকার। তাই বিএনপিকে খালেদা জিয়া ছাড়াই আগামীর রাজনীতি করতে হবে।

 

সিনিয়র নেতাদের মামলা সচল

বিএনপির সিনিয়র সব নেতার বিরুদ্ধেই রয়েছে একাধিক মামলা। নির্বাচনের আগে এই মামলাগুলোর ধীরগতি থাকলেও এখন এই মামলাগুলো আবার সচল করা হচ্ছে। বিশেষ করে দুর্নীতির মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

কর্মীদেরও মুক্তি নেই

নির্বাচনের সময় বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বিএনপির বিপুল কর্মী। নির্বাচনের পরও এদের মুক্তি মিলছে না। বরং এদের বিরুদ্ধে দ্রুত চার্জশিট দিয়ে মামলা নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ফলে এই সব কর্মীদের আপাতত মুক্তির সম্ভাবনা নেই। ফলে দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড মুখ থুবড়ে পড়বে।

আপনার মতামত লিখুন :