উপজেলা নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করাই সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ
সরকারবিরোধী বিএনপি জোটের বর্জন ঘোষণার পর উপজেলা নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক করতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সেজন্য নির্বাচনে অধিকসংখ্যক প্রার্থী নিশ্চিত করার ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। ফলে এবারের নির্বাচনে দলের বিদ্রোহীদের ব্যাপারে খানিকটা শিথিল অবস্থানে থাকার কৌশল নেয়া হতে পারে। দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক সূত্র এমন আভাস দিয়েছে।
সূত্রগুলো জানায়, প্রাথমিকভাবে উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সর্বোচ্চ তিনজন প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করে কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছিল জেলা নেতাদের। প্রস্তাবিত এসব নাম থেকেই একজনকে মনোনয়ন দেয়ার কথা। কিন্তু সেই অবস্থান থেকে খানিকটা সরে এসেছেন দলের নীতিনির্ধারকরা। ফলে অনেক জেলা থেকেই তিনজনেরও বেশি প্রার্থীর নামের তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। জানা গেছে, প্রস্তাবিত এসব নামের বাইরেও কেন্দ্র চাইলে অন্য কোনো যোগ্যপ্রার্থীকে চূড়ান্ত হিসেবে মনোনয়ন দিতে পারে।
এর বাইরে অন্য কেউ নির্বাচনে প্রার্থী হলেও দল তার ব্যাপারে কঠোর কোনো সিদ্ধান্তে যাবে না। এতে নির্বাচন উৎসবমুখর, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে নৌকার বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী বেশি হলে তৃণমূলে সহিংসতা বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। সেজন্য বিষয়টি আরো গভীরভাবে ভাবা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, বিএনপি জোট উপজেলা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়ায় এবারের নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করাই সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দলীয় প্রতীকের এ নির্বাচনে সরকারবিরোধীরা অংশ না নিলে শেষ পর্যন্ত তার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন ওঠতে পারে। বিএনপি জোট মাঠে না থাকায় নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আগ্রহে ভাটা পড়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের তিনজন নেতা আলাপকালে বলেন, তৃণমূলে দ্বন্দ্ব-কোন্দল এবং সংসদ সদস্যদের ক্ষমতা ও প্রভাব বিস্তারের কারণে সব উপজেলা থেকে প্রকৃত যোগ্যপ্রার্থীদের নাম নাও আসতে পারে। কোনো কোনো এলাকায় সংসদ সদস্যরা প্রভাব খাটিয়ে অনুসারীদের নাম পাঠানোর চেষ্টা করতে পারেন। অনেক উপজেলা থেকে এরই মধ্যে এ ধরনের অভিযোগ কেন্দ্রে এসেছে। তাই তৃণমূল থেকে নাম না এলেও কোনো প্রার্থী যোগ্য মনে হলে শেষ পর্যন্ত দল থেকে তাকেই মনোনয়ন দেয়া হবে।
এ দিকে তৃণমূল থেকে সর্বোচ্চ তিনজনের নাম প্রস্তাব করে পাঠানোর নির্দেশনা থাকলেও একাধিক জেলা থেকে তিনজনেরও বেশি প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করে পাঠানো হয়েছে। তৃণমূল নেতারা বলছেন, যোগ্যতা এবং প্রভাবশালী এমপি, মন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় নেতাদের আবদার রাখতেই যোগ্য প্রার্থীর সাথে অনেক কম যোগ্য প্রার্থীরও নাম জুড়ে দিয়ে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে কেন্দ্রই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও মনোনয়নবোর্ডের সদস্য লে. ক. (অব:) ফারুক খান বলেন, কেউ কোনো অনিয়ম করলে এবং সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে কেন্দ্র অবশ্যই হস্তক্ষেপ করবে।



