৩০ ডিসেম্বরের সব অপকর্ম প্রকাশ করা হবেঃ রব
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে রাজপথের কঠোর আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।
তারা বলেছেন, আর বেশিদিন মানববন্ধনের মতো কর্মসূচি পালন করা হবে না। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি ‘ভুয়া’ নির্বাচনের গণশুনানি করা হবে। এরপর গণতদন্ত করা হবে। সারা দেশে জনমত তৈরির মাধ্যমে কর্মজীবী-পেশাজীবীসহ জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।
বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘কালো ব্যাজ ধারণ ও মানববন্ধন’ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা।
‘৩০ ডিসেম্বর ভোট ডাকাতির প্রতিবাদে’ এ কর্মসূচির আয়োজন করে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
এর আগে একই দাবিতে ৩০ জানুয়ারি একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশনের দিন সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক ঘণ্টার মানববন্ধন করে বিএনপি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, ৩০ তারিখ ভোট হওয়ার কথা। কিন্তু ২৯ তারিখে ভোট ডাকাতি হয়েছে। পৃথিবীর ইতিহাসে সূচক হলো ১০০ ভাগ। কিন্তু বাংলাদেশে ভোট ডাকাতি হয়েছে ১১৭ পয়েন্ট ৩ পারসেন্ট। এর মধ্যে ৯৭ দশমিক ৩ ভাগ হলো ব্যালেটে ডাকাতি, ৫ ভাগ যারা নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত ছিল কিন্তু ভোট দিতে পারে নাই, ৫ ভাগ হলো যারা মারা গিয়েছে, বিদেশে আছেন।
৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন না হয়ে নাটক হয়েছে উল্লেখ করে রব বলেন, ৩০ তারিখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু লোক, প্রশাসনের একটি অংশ মিলে যে ডাকাতি করেছে এখন তার উৎসব করা হচ্ছে। রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলের অধীনে নেয়া হয়েছে। পুরস্কার দেয়া হচ্ছে, ঘুষ দেয়া হয়েছে ইউনিয়ন পর্যায়ে। হাজার হাজার কোটি টাকা ঘুষ দেয়া হয়েছে। প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রিসাইডিং, রিটার্নিং অফিসারদেরও ঘুষ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক মিডিয়া জানে দেশে কীভাবে প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে। এবারের নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে দলীয় সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না। আমি দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, ক্ষমতা দখল করে দেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থা অবসান হবে না। এই সরকারের অন্যায় শাসন বাংলাদেশের জনগণ মেনে নেবে না।
জেএসডি সভাপতি রব বলেন, ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন অসুস্থতার কারণে কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচিতে উপস্থিত হতে পারেননি। জোটের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার জন্য গেছেন। এছাড়া নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাও দেশের বাইরে। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী পারিবারিক কারণে আসতে পারেননি। আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বলছি, ঐক্যফ্রন্ট ছিল, ঐক্যফ্রন্ট আছে, ঐক্যফ্রন্ট থাকবে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও গণফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক মোশতাক আহমেদ ও বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদের পরিচালনায় কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন- বিএনপির সেলিমা রহমান, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কাজী আবুল বাশার, জেএসডির আবদুল মালেক রতন, গণফোরামের জগলুল হায়দার আফ্রিক, রফিকুল ইসলাম পথিক, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার, মমিনুল ইসলাম, জনদলের এটিএম গোলাম মওলা চৌধুরী প্রমুখ।
উপস্থিত ছিলেন- গণফোরামের আমসা আমিন, বিকল্পধারার অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল, বিএনপির অধ্যাপক সাহিদা রফিক, বিলকিস জাহান শিরিন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, শিরিন সুলতানা, আবদুল আউয়াল খান, নবী উল্লাহ নবী, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, ইয়াসীন আলী, এসএম জিলানী, ফখরুল আলম রবিন, রেজাওয়ানুল হাসান রিয়াজ প্রমুখ।



