ইসলামী ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে পরিবর্তনের নেপথ্য কারণ কী: ফখরুল।

ইসলামী ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে পরিবর্তনের অন্য কোনো কারণ রয়েছে বলে সন্দেহ করছে বিএনপি।
সোমবার নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্যে সেই ‘নেপথ্য কারণ’ সরকারের কাছে জানতে চেয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামীর বেশ কয়েকজন নেতা এই ব্যাংকটি পরিচালনায় যুক্ত ছিলেন। তাদের একজন মীর কাসেম আলী যুদ্ধাপরাধের দায়ে গত বছর ফাঁসিতে ঝুলেছেন।
জামায়াত-সংশ্লিষ্ট এই ব্যাংকটিকে সরকারে নিয়ন্ত্রণে আনতে দাবি তুলেছিল যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবির আন্দোলনকারীরা। এরপর কয়েক বছর আগে ব্যাংকটিতে নজরদারিতে পর্যবেক্ষক বসায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
গত বৃহস্পতিবার ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্যদের সভায় বড় পরিবর্তন আসে। আগের চেয়ারম্যান মুস্তাফা আনোয়ার, ভাইস চেয়ারম্যান আজিজুল হক ও এমডি মোহাম্মদ আবদুল মান্নান স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন।
এই পরিবর্তন ব্যাংকটির বিদেশি অংশীদাররা চাইছিলেন বলে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত কারণ দেখিয়েছেন, তবে তাতে সন্তুষ্ট নন ফখরুল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমরা পরিষ্কার করে জানতে চাই, এই বিদেশটা কোন বিদেশ, যারা এই চাপ সৃষ্টি করছে।
“আমরা খুব ভালো করে জানতে চাই, ইসলামী ব্যাংক কী প্রবলেমগুলো ক্রিয়েট হয়েছে যে যার জন্য পুরোপুরি ম্যানেজমেন্ট চেইঞ্জ করতে হচ্ছে। আমরা ভালো-মন্দ বলছি না, কিন্তু বিষয়গুলো জানতে চাচ্ছি।”
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার বাংলাদেশের ব্যাংক খাত ধ্বংস করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ফখরুল।
“ব্যাংকিং সেক্টরকে সম্পূর্ণভাবে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। নতুন ব্যাংকগুলো সমস্ত আওয়ামী লীগের যারা, নেতা না হয় এমপি না হয় মন্ত্রী, এমনকি এরশাদ সাহেবও পেয়েছে।”
সরকার উন্নয়নের যে পরিসংখ্যান তুলে ধরছে, বাস্তব চিত্রের সঙ্গে তার ফারাক রয়েছে বলেও দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।
“সিপিডি কালকে (রোববার) তাদের রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, ডাইভারসিটিফাইড ইনভেস্টমেন্ট হচ্ছে না। কয়েকটি খাতে সীমিত আকারে ইনভেস্টমেন্ট হচ্ছে।”
সব ক্ষেত্রে দুর্নীতি চলছে দাবি করে তিনি বলেন, “প্রত্যেকটি পত্রিকা খুললে দেখা যায়, দেশ দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে।”
শিক্ষা ব্যবস্থার চিত্র নিয়ে ফখরুল বলেন, “এইচএসসি ও এসএসসিতে জিপিএ ৫ ও গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়েও ১-২% শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারছে না। ব্যাঙের ছাতার মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে, এমনও বিশ্ববিদ্যালয় আছে, যার ঠিকানা পর্যন্ত ঠিকমতো নাই।
“আরও ভয়াবহ যেটা, অলিতে-গলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো মেডিকেল কলেজ দেওয়া হয়েছে। আমি জানি না, এদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় আমাদের সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা কী হবে?”
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্তরে শিক্ষক নিয়োগে ‘দলীয়করণ’, পাঠ্যপুস্তকে ভুলের বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
“বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ফলাফল দেখে বোঝা যায়, শিক্ষার মান কতটা নিচে নেমে গেছে। নিজেদের গায়ে দোষ না নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে না কি নীলক্ষেতের গাইড থেকে প্রশ্ন করা হয়। আমরা মনে করি, দেশকে ধ্বংস করার অপচেষ্টার অংশ হিসেবেই শিক্ষা ব্যবস্থাকে পরিকল্পিতভাবে ধবংস করা হচ্ছে।”