আ.লীগ-বিএনপিতে মনোনয়ন দ্বন্দ্ব

স্টাফ রিপোর্টার:>>>
ঢাকা-২০ (ধামরাই) আসনে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী বেশ সক্রিয় আছেন। প্রধান দুই দলে সম্ভাব্য প্রার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় মনোনয়ন নিয়ে দ্বন্দ্বও টের পাওয়া যাচ্ছে। বড় দুই দলের এ দ্বন্দ্বের সুযোগ কাজে লাগাতে চায় জাতীয় পার্টি।
ধামরাইয়ের বর্তমান এমপি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এমএ মালেক। গত সাড়ে তিন বছরে তিনি এলাকায় উন্নয়ন করেছেন বলে দাবি তার অনুসারীদের। তার সমর্থকদের দাবি, বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ধামরাই আসনে আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করেছেন। তাই এমএ মালেক এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী। সে হিসেবে এলাকায় তিনি ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে সাবেক সাংসদ ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বায়রার সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা বেনজীর আহমদও দলের মনোনয়ন পাওয়ার আশায় কেন্দ্রে লবিং করছেন। তিনিও বেশ দৃঢ়তার সঙ্গে বলছেন, দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা এবার তাকে ছাড়া অন্য কাউকে মনোনয়ন দেবেন না। এলাকায় তিনি গণসংযোগ ও নানা নির্বাচনী তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন।
প্রভাবশালী ওই দুই নেতা ছাড়া মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে এলাকায় আলোচনায় আছে ধামরাই পৌরসভা মেয়র গোলাম কবির, কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সাবেক সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী, বাইশাকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের নাম। ক্ষমতাসীন দলের একাধিক নেতা মনোনয়নপ্রত্যাশী হওয়ায় দলীয় নেতাকর্মী ও ভোটারদের প্রশ্ন কে দলের মনোনয়ন পাবেন?
বর্তমানে ধামরাইয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এমএ মালেক ও বেনজীর আহমদের নেতৃত্বে দুই ধারায় বিভক্ত হয়ে আছে। এ সমস্যার সমাধান না হলে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন নেতাকর্মীরা।
এক সময় বিএনপির ঘাঁটি ছিল ধামরাই উপজেলা। দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকায় নেতৃত্বের প্রশ্নে দলে সৃষ্টি হয়েছে গ্রুপিং। দলের উপজেলা কমিটি গঠন করা হলেও সিনিয়র নেতারা এখনো এক টেবিলে বসতে পারেননি। প্রত্যেকেই যার যার অবস্থান থেকে দলীয় কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন। বিএনপির সাবেক আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান খান এ আসন থেকে চারবার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনেও তিনি দল থেকে মনোনয়ন পাবেন বলে তার সমর্থকরা বিশ্বাস করেন। ব্যারিস্টার জিয়াউর নিজেও নেতাকর্মীদের সঙ্গে থেকে ধামরাইকে আবার বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে প্রমাণ করাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ তমিজউদ্দিন দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার আশায় তার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মাঠে রয়েছেন। এ ছাড়াও মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদও মনোনয়ন চান। এর বাইরে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ইয়াছিন ফেরদৌস মুরাদও নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন।
ধামরাইয়ে জাতীয় পার্টির একক প্রার্থী ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি দুবারের সাবেক এমপি খান মুহাম্মদ ইস্রাফিল খোকন। বিভিন্ন প্রতিকূলতা কাটিয়ে আগামী সংসদ নির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তিনি।
মনোনয়ন বিষয়ে সাংসদ এমএ মালেক বলেন, আমি ইতোমধ্যে ধামরাইকে আধুনিক উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলেছি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি আমাকে মনোনয়ন দেন, তা হলে বাকি কাজগুলো শেষ করব ইনশাল্লাহ।
ধামরাই উপজেলা বিএনপির সভাপতি তমিজউদ্দিন বলেন, দলের দুঃসময়ে আমি নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম, এখনো আছি। আমার বিশ্বাস, দল আমাকেই মনোনয়ন দেবে।
খান মুহাম্মদ ইস্রাফিল খোকন জানান, ধামরাইয়ের জনগণ জাতীয় পার্টিকে আবারও ক্ষমতায় দেখতে চায়। অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, আমি এমপি হলে ধামরাইয়ে ব্যাপক উন্নয়ন করতে পারব।