মেয়র পদে মনোনয়ন পেতে আ.লীগ নেতাদের ঘুম হারাম

GS News 24GS News 24
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১১:৩৫ এএম, ০৭ নভেম্বর ২০১৭

অনলাইন ডেস্ক :>>>>

আগামী ২১ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। ব্যতিক্রম শুধু জাতীয় পার্টি। এ দলটি থেকে মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে মেয়র প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দিয়েছেন দলের প্রধান এইচ এম এরশাদ। ৪ নভেম্বর রাতে ঢাকায় ডেকে নিয়ে দলীয় মনোনয়নপত্র দেওয়া হয়েছে তাকে। তবে নির্ঘুম রাত পার করছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং অন্যতম বিরোধী দল বিএনপির অন্তত ১৮ জন ব্যক্তি মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ার জন্য দলীয় মনোনয়ন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। অনেকেই ঢাকায় অবস্থান করে দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন। শুরুতে আওয়ামী লীগ থেকে ১৩ জন মেয়র প্রার্থী হতে চাইলেও হাল ছেড়ে দিয়েছেন অনেকে, তবে এখনও দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার হাল ছাড়েননি ছয় জন। মেয়র পদে লড়ার জন্য দলের টিকেট পেতে জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এদের মধ্যে বর্তমান সিটি মেয়র শরফ উদ্দীন আহমেদ ঝন্টু, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য চৌধুরী খালেকুজ্জামান, মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি শাফিয়ার রহমান, মেট্রোপলিটন চেম্বার সভাপতি রেজাউল ইসলাম মিলন, সাবেক চেম্বার সভাপতি আবুল কাশেম এবং রংপুর-৫ আসনের সাংসদ ও দলের কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমানের ছেলে রাশেক রহমান।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের আলোচিত ছয় প্রার্থীর মধ্যে ক্লিন ইমেজ, রাজনৈতিক দক্ষতা, আগামী জাতীয় নির্বাচনের বৈতরণী পার করানোর ক্ষমতা, কর্মীদের মধ্যে জনপ্রিয় ও দলের শীর্ষ পর্যায়ে যোগাযোগ ভালো এমন কাউকেই প্রার্থী হিসেবে পেতে চাইছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে দলের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি শাফিয়ার রহমান ও সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল দুই জনই দলের মেয়র প্রার্থী হতে চাইছেন। এছাড়াও কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য চৌধুরী খালেকুজ্জামানও দলের টিকিট পাবেন বলে আশা করছেন। এ ছাড়াও বর্তমান মেয়র শরফ উদ্দিন আহাম্মেদ ঝন্টু আবারো দলের মনোনয়ন পেয়ে যাবেন বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন। অপরদিকে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে মনোনয়নের ব্যাপারে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে সাবেক পৌর মেয়র ও জাতীয় পার্টির নেতা আব্দুর রউফ মানিকের সমর্থকদের পক্ষ থেকে।

 

তবে আওয়ামী লীগে যোগ না দিয়ে কিভাবে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হলেন এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আব্দুর রউফ মানিক জানান, অনেক আগেই আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন তিনি। মেয়র পদে এবার আওয়ামী লীগ থেকে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন মানিক। এদিকে রংপুর চেম্বার অফ কর্মাসের সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম জানান, ক্লিন ইমেজ বলতে যা বোঝায় তা শুধু তিনিই দাবি করতে পারেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য চৌধুরী খালেকুজ্জামান জানান, রংপুর সদর-৩ আসনে পর পর তিনটি নির্বাচনে তাকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল কিন্তু জোট করে নির্বাচন করায় প্রতিবারই এরশাদকে এ আসনটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। দলের জন্য তার ত্যাগ ও ব্যক্তিগত ইমেজসহ সব বিষয় বিবেচনা করে দল তাকেই মনোনয়ন দেবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।

রংপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আতাউজ্জামান বাবু নিজেকে মেয়র প্রার্থী দাবি করে বলেছেন, ‘বর্তমান মেয়র ঝন্টুকে মনোনয়ন দিলে আমরা কেউ কাজ করবো না। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদের সাথে দেখা করে বিষয়টি তাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ মেয়রের বিরুদ্ধে একই সুরে কথা বলেছেন আরেক মেয়র প্রার্থী ও রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি শাফিয়ার রহমান। মেয়র ঝন্টুর বিরুদ্ধে অনেক রকম অভিযোগ করেছেন তারা। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে শরফ উদ্দীন আহমেদ ঝন্টু জানান, এসব তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। এদিকে অন্যান্য নেতারা রাশেক রহমানকে নিয়ে না ভাবলেও ব্যানার পোস্টারে প্রচারণার পাশাপাশি সাংবাদিকদের সঙ্গেও মতবিনিময় করছেন তিনি।

আপনার মতামত লিখুন :