একটু ভালো করে বাঁচতে পারে নি রাজুর !

ফেনী প্রতিনিধি:>>>
একটু ভালোভাবে বাঁচার আশায় বাবা-মার হাত ধরে লক্ষ্মীপুরের কমলগঞ্জ থেকে এই ফেনী শহরে এসেছিল শিশু রাজু। বাবা মার অভাবের সংসারে একটু স্বচ্ছলতা এনে দিতে এই অল্প বয়সে কাঁধে তুলে নিয়েছিল রিকশা চালানোর মত ভারী পরিশ্রমের কাজ। ছোট্ট দুহাতে ব্যাটারী চালিত রিকশার হ্যান্ডেল ধরে শহরের পথে পথে দিনভর ঘুরে বেড়াত যাত্রী নিয়ে। স্বভাবে উচ্ছ্বল আর দুরন্ত স্বভাবের ছোট্ট ছেলেটা শহরের একাডেমী, ফারুক হোটেলের আশপাশে, বনানী পাড়া ও বারাহীপুর এলাকায় রিক্সা চালাত।
মামা যাবেন বলে ডাক দিত যাত্রীদের। সোমবার প্রতিদিনের মত বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল রিকশা নিয়ে। ফেনী সদর হাসপাতাল থেকে থেকে লাপাত্তা হয়ে যায় ছেলেটা। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। মঙ্গলবার থানায় সাধারণ ডায়েরী করে তার পরিবার। গতকাল রাত ৮ টার দিকে ফেনী সদর হাসপাতাল মোড় সংলগ্ন পানির টাংকির কাছে বাঙ্গালী হোটেলের পাশে রাজুর ব্যাটারী বিহীন খালি রিক্সাটি পাওয়া যায়। কিন্তু রাজুকে পাওয়া যায় নি তখনও।
আজ বুধবার দুপুরে শহরের সুলতানপুর এলাকায় একটি কিশোরের লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। দেহ পচে গলে দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। কে বা কারা তাকে নির্মম পৈচাশিকভাবে হত্যা করে ফেলে গেছে। খবর পেয়ে ছুটে যায় তার পরিবারের সদস্যরা। লাশটি রাজুর বলে সনাক্ত করেন তারা। পরে পুলিশ সদস্যরা গিয়ে তার লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ফেনী সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে।
ফেনী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাশেদ খান চৌধুরী বলেন, এটি হত্যা নাকি স্বাভাবিক মৃত্যু তা এখন বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের পর তা জানা যাবে।
রাজুর পুরো নাম মো: রাজীব। বয়স ১৪ হবে। তার বাবার নাম মো: সেলিম। তাদের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার কমলগঞ্জে।
কি অপরাধ ছিলো এই ছেলেটির ?? কে দিবে এর জবাব ?? কি এমন ক্ষতি করছিলো খেটে খাওয়া এই ছেলেটি?? এমন প্রশ্ন ঘুরছে ফেসবুকে। রাজুর মায়ের আহাজারিতে ভারী সুলতানপুরের আকাশ। বুকফাটা চিৎকারে প্রিয় সন্তানকে ফিরে পেতে মাতম করছেন তিনি।
স্থানীয়দের ধারণা, রাজুর রিকশার ব্যাটারীর লোভে দূর্বত্তরা তাকে অপহরণ করে। রাজু তাদের চিনে ফেলায় তাকে এভাবে হত্যা করে ফেলে যায় তারা।