নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হবে : মির্জা ফখরুল

জিএস নিউজজিএস নিউজ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৩:৪৯ পিএম, ০৩ জানুয়ারি ২০১৯

স্টাফ রিপোর্টার:>>>

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘ফল প্রত্যাখান করলে শপথ থাকে নাকি’। সংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন ইতোমধ্যে শপথ হয়েছে গেছে। আমরা এ নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখান করে শপথ নেব না।

বৃহস্পতিবার (৩ জানুয়ারি) দুপুর সোয়া ২টার দিকে গুলশানে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‌‘আমরা তো নির্বাচনের ফলাফল আগেই প্রত্যাখ্যান করেছি। অন্যদের শপথ নেওয়া হয়ে গেছে। আমরা শপথ নিচ্ছি না।’

তিনি বলেন, ‘প্রার্থীরা নির্বাচনের বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ জানিয়ে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করবে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই নির্বাচনে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। আমরা এই নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছি। নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর আজকে আমরা স্মারকলিপি দেবো।’

এদিকে শপথ নিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা। বৃহস্পতিবার (৩ জানুয়ারি) সংসদ ভবনের সংশ্লিষ্ট কক্ষে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাদের শপথ বাক্য পাঠ করান।

এর আগে শুরুতেই শপথ নেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

তার আগে, মঙ্গলবার নতুন নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নামে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।

বর্তমান স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী একাদশ সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হওয়ায় তিনি আগে শপথ গ্রহণ করেন। পরে স্পিকার হিসেবে তিনি নির্বাচিত অন্য সদস্যদের শপথ পড়ান।

সংবিধান অনুযায়ী স্পিকার নিজেই নিজের শপথ পড়ান। শপথ শেষে সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যরা বৈঠক করে নিজেদের সংসদ নেতা নির্বাচন করবেন।

বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আসেননি। ইতিমধ্যে তারা ভোটের ফল প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে সংবিধান অনুযায়ী সংসদ অধিবেশন শুরুর ৯০ দিনের মধ্যে তাদের শপথ নিতে হবে। তা না হলে তাদের সংসদ সদস্য পদ বাতিল হয়ে যাবে।

সংসদ নির্বাচনের ফল গেজেট আকারে প্রকাশের তিন দিনের মধ্যে শপথ গ্রহণের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এরপর ৩০ দিনের মধ্যে অধিবেশন ডাকতে হবে। একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরুর ৯০ দিনের মধ্যে জাতীয় সংসদের স্পিকারকে অবহিত না করলে বা শপথ না নিলে সদস্যপদ খারিজ হয়ে যাবে।

সরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে সংসদ অধিবেশন ডাকার বিষয়ে সংবিধানে বাধ্যবাধকতা আছে।

এ প্রসঙ্গে সংবিধানের ৭২ অনুচ্ছেদের (২)-এর (১) দফায় বলা হয়েছে, ‘সংসদ সদস্যদের যে কোনো সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষিত হইবার ত্রিশ দিনের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠানের জন্য সংসদ আহ্বান করা হইবে।’

নতুন নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নামে গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে সরকারিভাবে ফল ঘোষণা করা হয়। কাজেই গেজেট প্রকাশের দিন থেকে এক মাসের মধ্যে সংসদের প্রথম অধিবেশন বসবে। আগামী ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত দশম সংসদের মেয়াদ আছে।

৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২৮৮টি আসনে জয়লাভ করে। মোট ২৯৮ জন সংসদ সদস্যের নামে গেজেট জারি করা হয়।

বাকি দুটির মধ্যে গাইবান্ধা-৩ আসনে একজন প্রার্থী মারা যাওয়ায় সেখানে নির্বাচন হয়নি। এ ছাড়া ব্রাক্ষণবাড়িয়া-২ আসনের তিনটি কেন্দ্রে পুনর্নির্বাচন করতে হবে বলে সেখানে ফলাফল স্থগতি রয়েছে।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একাই জিতেছে ২৫৭টি আসনে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় দলটি টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জোট পেয়েছে ৭টি আসন।

বিএনপি এককভাবে পেয়েছে ৫টি। নির্বাচনে এককভাবে ২২টি আসন পেয়ে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হয়েছে জাতীয় পার্টি। একাদশ সংসদে তারাই বিরোধী দল হতে যাচ্ছে।

বিগত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ৮ জানুয়ারি গেজেট প্রকাশ করা হয়। তার পরের দিন ৯ জানুয়ারি শপথ গ্রহণ করে নির্বাচিত সদস্যরা। আর প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় ২৯ জানুয়ারি।

আপনার মতামত লিখুন :