বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণ

সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা:>>>
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের হালুয়ারঘাট বাজারে বিয়ের মিথ্যা প্রলোভন ও প্রেমের অভিনয় করে ১৫ বছরের এক নাাবলিকা স্কুলছাত্রী একাধিকবার ধর্ষনের ধর্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাতে সদর মডেল থানার এস আই মোঃ ইমতিয়াজ উদ্দিন হালুয়ারঘাট বাজারে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করেন।
ধর্ষনকারীর নাম মোঃ সুজন মিয়া(২০)। সে সুরমা ইউনিয়নের বালিকান্দি(পাচকিয়ারী) গ্রামের মৃত মণির হোসেনের ছেলে। তার পিতার মৃত্যুর পর সে কয়েক বছর ধরে হালুয়ারঘাট বাজারে মুদি দোকানের ব্যবসা করে আসছিল। গত দ’ বছর পূর্বে পাশের চা দোকানদার মোঃ নাসির উদ্দিনের নাবালিকা মেয়ে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী স্কুলে আসা যাওয়ার পথে বখাটে সুজন মিয়া তাকে প্রায় সময়ই উদ্যেক্ত করত বলে জানা যায়। ঐ ছাত্রী বিভিন্ন সময় তাদের পাশের দোকানদার হিসেবে সুজনের দোকানে বই খাতা কলম কিনতে গেলে তাকে ঐ লম্পট বিরক্ত করে আসছিল। এক পর্যায়ে লম্পট ঐ ছাত্রীকে প্রেমের অভিনয় করে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ফুসলিয়ে একাধিকবার ধর্ষন করে বলে মেয়েটির পরিবারের অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩ জানুয়ারী গভীর রাতে লম্পট সুজন মিয়া মোবাইল ফোনে মেয়েটিকে এস এম এস দিয়ে তার দোকান ঘরে ডেকে নিয়ে রাতভর ধর্ষন করে। রাতে হঠাৎ মেয়েটির মা মেয়েকে ঘরে দেখতে না পেয়ে বাজারে বের হয়ে অনেক খোঁজাখুজি করতে থাকেন। এ সময় বাজারের পাহারাদার মোঃ মনাফ মিয়ার সাথে মেয়েটির পরিবারের সদস্যরা কথা বলে লম্পট সুজনকে সন্দেহ হলে তার দোকানে গিয়ে দরজা খোলার কথা বলেন। সে দরজা খুললে এ সময় মেয়ের পিতামাতা ও বাজারের পাহারাদার মনাফ মিয়া দোকান ঘরে ঢুকে তার দোকানঘরের চৌকির নীচে লম্পট সুজন মিয়া মেয়েটিকে লুকিয়ে রাখাা অবস্থায় দেখতে পান। পরে সুজনের চাচা মুহিম মিয়া ,মুক্তিযোদ্ধা নজীর আলীসহ ছেলেটির আত্মীয় স্বজনরা ঘটনাটি জেনে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে নিস্পত্তি করার কথা বলেন। পরবর্তীতে সালিশের নামে ছেলে পরিবার ও আত্মীয় স্বজনরা সময় কালক্ষেপন করতে থাকেন । এদিকে ঘটনাটি মামলা মোকদ্দমা সহ কাউকে না বলার জন্য লম্পট সুজন মিয়াসহ তার আত্মীয় স্বজনরা মেয়ের পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি দামকী দিয়ে আসছিল। ফলে ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তার কারণে ঘটনার এক সপ্তাহ পর্যন্ত তারা ঘরের বাহিরে যেতে পারেন নি। গত ৮ জানুয়ারী সুযোগ বুঝে পিতামাতা তাদের ধর্ষিতা মেয়েটিকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করে পরীক্ষা নিরীক্ষা সম্পন্ন করেন। এ ঘটনায় এলাকায় এক চাঞ্চল্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ধর্ষনের ঘটনাটিকে ছেলে ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালানোর হচ্ছে এবং ধর্ষনকারীকে তাড়াহ্রড়া করে বিদেশ পাঠানোর পায়ঁতারা চলছে বলে স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়। এ ব্যপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে মেয়েটির পরিবার সূত্রে জানা যায়।
এ ব্যাপারে ধর্ষিতার মা মোছাঃ সাফিয়া বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের জানান, আমরা গরীব মানুষ আমার মেয়েটি অবুঝ সাদামাটা সহজ সরলভাবে চলাফেরা করে। মাঝে মধ্যে আমার মেয়ে সুজনের দোকানে খাতা কলম কিনতে যেত এলাকার বাসিন্দা হিসেবে ছেলেটিকে আমরা কখনো খারাপ চোখে দেখিনি । আমার মেয়ের সরলতার সুযোগ নিয়ে সে আমার মেয়ের জীবনটা এভাবে নষ্ট করে দিবে কোনদিন কল্পনা করিনি। ঘটনার দিন রাতে বাজারের পাহারাদার মনাফ মিয়াও মেম্বারের ভাই মুহিম মিয়ার কাছে জানতে পেরে আমার মেয়েকে তার দোকান হতে এলাকাসীর সহযোীতায় উদ্ধার করে সব কিছু জানতে পেরেছি। কিন্তু ঘটনার পর এক সপ্তাহ ধরে ছেলে ও তার পরিবারের লোকজন আমাদেরকে হুমকি দামকী দেয়ার কারণে ঘরের বাহিরে যেতে পারিনি। আমার নাাবলিকা মেয়ে সর্বনাশকারী ধর্ষক সুজন মিয়ার কঠোর শাস্তি প্রদানের জন্য সরকার ও প্রশাসনের নিকট দাবী জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোঃ শহীদুল্লাহ ধর্ষককে গ্রেফতারের সত্যতা নিশিচত করে জানান ধর্ষিতার মা মোছাঃ সাফিয়া বেগম বাদি হয়ে ধর্ষক মোঃ সুজন মিয়াকে আসামী করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।