দিনাজপুরে ধর্মঘট চতুর্থ দিনে: অনড় অবস্থানে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা

স্টাফ রিপোর্টার:>>>>
দিনাজপুরে পরিবহন ধর্মঘটের চতুর্থ দিন আজ রবিবার। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর অগ্নিসংযোগের শিকার দুটি বাসের ক্ষতিপূরণ এবং এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় দিনাজপুর জেলায় সর্বাত্মক এই পরিবহন ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে। বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, ট্যাংকলরিসহ কোনও ধরনের যানবাহনই চলছে না। সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। রবিবার (২৬ নভেম্বর) দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে একটি সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে নিজ নিজ অবস্থানে অনড় রয়েছেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) কর্তৃপক্ষ ও পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা।
রবিবারের (২৬ নভেম্বর) এই বৈঠকে হাবিপ্রবির প্রতিনিধিদল, দিনাজপুর সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের নেতারা ও মোটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের সাত সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের কথা রয়েছে আজ।
দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম জানান, ‘ধর্মঘট নিরসনের ব্যাপারে দফায় দফায় আলোচনা চলছে। আশা করা যাচ্ছে আজকের মধ্যেই সংকট নিরসন করা সম্ভব হবে।’
তবে শনিবার মোটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এম. রফিক বলেন, ‘এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাদের পাঁচটি বাস ভাঙচুর করেছে। জন দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে তখন আন্দোলনের ডাক দেওয়া হলেও তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এবার আর ছাড় দেওয়া হবে না।’
দিনাজপুর সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম সেলু বলেন, ‘ভাঙচুর করা যানবাহনের ক্ষতিপূরণ না দেওয়া হলে এবং জড়িতদের আইনের আওতায় না আনা হলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হবে না। ইতোমধ্যেই রংপুর বিভাগের আট জেলায় আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে আলাপ-আলোচনা চলছে।’
এদিকে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. শফিউল আলম বলেন, ‘পরিবহন শ্রমিক ও মালিক পক্ষের আন্দোলন যৌক্তিক নয়। রাতে কে বা কারা বাসে অগ্নিসংযোগ করেছে, তা কেউ জানে না।’
উল্লেখ্য, গত বুধবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বহন করা একটি বাসের সঙ্গে তৃপ্তি পরিবহন নামে একটি বাসের সাইড দেওয়াকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের সঙ্গে ছাত্রদের সংঘর্ষ হয়। এতে দুই ছাত্র ও তিন শ্রমিক আহত হন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীরা কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর ও দুটি বাসে অগ্নিসংযোগ করেন। এর প্রতিবাদে বুধবার রাতেই দিনাজপুর মোটর পরিবহন শ্রমিক ও দিনাজপুর সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট আহ্বান করে। পরিস্থিতি নিরসনে বৃহস্পতিবার বিকালে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম তার সভাকক্ষে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং দিনাজপুর মোটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ও জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের নেতাদের নিয়ে এক বৈঠক করেন। তবে কোনও সমঝোতা ছাড়াই আলোচনা ভেস্তে যায়।
পরে এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ দেড়শ’ জনকে আসামি করে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করে সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ ও মোটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন। আর হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দুই শ্রমিক নেতাসহ ৪৪ জনের বিরুদ্ধে একটি মামমলা দায়ের করা হয়