‘ইভিএম ভোট ডাকাতির মেশিন’ ফেনীতে আক্কেল চাচা

জেলা প্রতিনিধিজেলা প্রতিনিধি, ফেনী
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১১:৩২ পিএম, ৩০ মার্চ ২০১৯

ফেনী সদর উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে আগামীকাল ভোট গ্রহণ নিয়ে ভোটার ও প্রার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। কেউ বলছেন এই যন্ত্রে ভোট হবে ঝামেলাবিহীন। এটি প্রযুক্তিবান্ধব। কেউ বলছেন, সূক্ষ্মভাবে ভোট চুপি করতেই এই ব্যবস্থা।

ফেনীতে এবারই প্রথম ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রথমবারের মতো জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম যুক্ত হওয়ায় ভোটারদের মধ্যে এ নিয়ে কমবেশি আলোচনা হচ্ছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার বালিগাঁ এলাকার একটি চায়ের দোকানে আড্ডা চা খাচ্ছেন ওই গ্রামের বেশ কয়েক মানুষ। এরা অধিকাংশ কৃষি কাজের সঙ্গে যুক্ত। তাদের একজন জাবেদ আহমেদ।, তিনি বলেন আমি পড়ালেখা জানি না। মেশিনে ভোট দিবো কীভাবে?

ইভিএম নিয়ে কিছুই জানেন না এমন ভোটারও এই গ্রামে রয়েছে। শহরেরর ডাক্তার পাড়ার বাসিন্দা সালাম আহমেদ, ইভিএম সম্পর্কে এ প্রতিনিধির কাছেই প্রথম শুনলেন। তিনি বলেন, ‘ভোট দিতে পারলে বুঝতে পারবো এটি কেমন।’

শনিবার রাতে উপজেলার কাজিরবাগ এলাকার একটি চায়ের দোকানে আক্কেল মিয়া (৭৫) প্রকাশে আক্কেল চাচা বলেন, ইভিএম হবে হয়তো ভোট ডাকাতির মেশিন। এই মেশিন তৈরি করা হয়েছে শুধুমাত্র নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, উপজেলা নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে ফেনীর ৬ উপজেলায় ৩১ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ফেনী সদর উপজেলায় সাড়ে ৩ লাখ ভোটার ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট প্রদান করবেন। এদের মধ্যে এক লাখ ৮০ হাজার ৭২ জন পুরুষ ও ১ লাখ ৬৮ হাজার ১৮৪ জন মহিলা ভোটার রয়েছেন। এখানে ১২৭টি ভোট কেন্দ্রের ৮৮২টি ভোট কক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ উপজেলায় ভোটাররা শুধুমাত্র চেয়ারম্যান পদে ভোট দিতে পারবেন।

এই বিষয় জানতে চাইলে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্রপ্রার্থী আজাহারুল হক আরজু (আনারস) বলেন, আঙুলের ছাপ না মিললে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ভোট ম্যানুয়ালি নেওয়ার ক্ষমতা পাবেন, যা ভোট কারচুপির সুযোগ তৈরি করে দিতে পারে বলে তাঁর আশঙ্কা।

চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী আব্দুর রহমান ইভিএম সর্ম্পকে বলেন, ‘অবাধ সুষ্ট নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন এ ব্যবস্থায় আমি আনন্দিত।’ প্রযুক্তির সঙ্গে যেতেই হবে। কিন্তু সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে নিরক্ষর ভোটারদের জন্য এটি কতটা ব্যবহারবান্ধব হবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে ।

মহিপাল এলাকার একজন নারী ভোটার বলেন, ইভিএম নিয়ে নানা রকম বিতর্ক রয়েছে। ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ ব্যাপারে চূড়ান্ত মূল্যায়ন করা যাবে না।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নাছির উদ্দিন পাটোয়ারী এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, এর আগে ফেনীতে ইভিএম ব্যবহার না হওয়ায় এখানকার ভোটাররা এর ব্যবহার ও সুফল জানতেন না। এ নিয়ে ভোটারদের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল।

তবে প্রদর্শনীর কারণে ভোটারদের মাঝে ইভিএম নিয়ে সংশয় কেটেছে এবং ইভিএমে ভোট দিতে ভোটারদের আগ্রহ বেড়েছে। প্রদর্শনী চলাকালে প্রতিটি কেন্দ্রে ভোট প্রদান (নমুনা) করে হাতে কলমে ইভিএমের ব্যবহার শেখানো হয় ।

জিএসনিউজ/এমএইচএম/এমএআই

আপনার মতামত লিখুন :