মাটিরাঙ্গা ভূমি অফিসে এখন ৫ মিনিটেই পাওয়া যায় গুরুত্বপূর্ণ নথি

GS News 24GS News 24
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৩:৫৩ পিএম, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

স্টাফ রিপোর্টারঃ>>>
পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে প্রথম মাটিরাঙ্গা উপজেলা ভূমি অফিসের আলমারি গুলোতে ধাপে ধাপে সুসর্জিত ভাবে সাজানো রয়েছে ভূমি সংক্রান্ত সকল গুরুত্বপূর্ণ নথি ও কাগজ পত্র। হাত বাড়ালেই পাঁচ মিনিটের মধ্যে মিলবে বিভিন্ন মামলার রেকর্ড সংশোধন বই থেকে শুরু করে নামজারি মামলার গুরুত্বপূর্ণ সকল নথি। যা কিছু দিন আগেও ছিল শুধুই কল্পনা্র মত ছিল।
কিছু দিন আগেও রেকর্ড রুমগুলো ছোট্ট একটি কক্ষ ছিল। নথি পাওয়া নিয়ে ছিল কালক্ষেপণ। একটি নথি খুজে নিতে দিনের পর দিন লেগে যেতো। ১০ ফুট থেকে ৮ ফুট ছোট্ট রুমের মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতো ভূমি অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাগজ প্রত্র।
আবার মেঝেতে পড়ে থাকা নথিপত্রের ওপর ছাদ থেকে খসে খসে পড়েছে ছাদের আস্তর ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)র ছাদের উপরের রড দেখা যায়। যেকোন মূর্হুতে ছাদ ভেঙ্গে যেতে পারে। কক্ষে পোকামাকড় চেয়ে গেছে নথির উপরে অনেক পোকামাকড়ের বিষ্টা লেগে আছে যেখানে-সেখানে।
নথি পাওয়া বা একটি রেকর্ড সংশোধনের জন্য সেবাগ্রহীতাদের ঘুরতে হতো দিনের পর দিন। গত দুই মাস আগেও খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা ভূমি অফিসের চিত্র ছিল ঠিক এমনই। মাটিরাঙ্গা ভূমি অফিসকে বলা হতো ‘অব্যবস্থাপনার তীর্থভূমি’।
৩৩তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের আইসিটি বিশেষজ্ঞ মেধাবী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ আলী মাটিরাঙ্গা উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে যোগদানের কয়েকদিনের মধ্যেই বদলে গেছে মাটিরাঙ্গা ভূমি অফিসের রেকর্ড রুমের দৃশ্য থেকে শুরু করে সবকিছু।
মাটিরাঙ্গার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মাদ আলী জানান, এখানে যোগদানের পরপরই রেকর্ড রুমে নথির হাল দেখে অনেক হতাশ হই। তখন নথি ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তনের চিন্তা করি। যেমন চিন্তা তেমনই কাজ। আমার উদ্যোগে মাত্র কয়েকদিনে বদলে গেছে মাটিরাঙ্গা ভূমি অফিসের নথি ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে সার্বিক অবস্থা। এখন গুরুত্বপূর্ণ নথিগুলো বছর ও কেস নম্বর অনুযায়ী সাজানো হয়েছে সবকিছু।
এখন আবেদন করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাওয়া যাবে গুরুত্বপূর্ণ নথি এমনটাই জানিয়েছেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মাদ আলী। ভবিষ্যতে মাটিরাঙ্গা ভূমি অফিসে রেকর্ড রুম ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার বাস্তবায়নের স্বপ্নের কথাও বলেন তিনি।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী মোহাম্মদ ইউনুছ আলী মোল্লা বলেন, সিস্টেম লসের কারণেই অনেক সমস্যা হয়েছে। হাজার হাজার নথি ছোট একটি রুমে এলোমেলোভাবে পড়ে থাকায় ভোগান্তি বেড়েছে বহগুন। একটি নথি খুঁজে পেতে দিনের পর দিন লেগে যেতো। ফলে যথা সময়ে সেবাপ্রাপ্তি ব্যাহত হতো প্রতিনিয়ত। বর্তমান এসিল্যান্ড যোগদানের পরপরই স্যারের উদ্যোগের ফলে নথি ব্যস্থাপনায় গতি ফিরেছে। এখন আর কোন ভোগান্তি থাকবে না।
মাটিরাঙ্গা ভূমি অফিসের নথি সংরক্ষণের বিষয়ে জানতে চাইলে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিভীষণ কান্তি দাশ জিএস নিউজকে বলেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মাদ আলী মাটিরাঙ্গায় যোগদানের দুই মাসের মাথায় স্যাঁতস্যাঁতে মেঝেতে ধুলা-ময়লায় ঢেকে থাকা ফাইলগুলো নতুন করে সেজেছে। ভবিষ্যতে ভূমি অফিসের সব কর্মকাণ্ডে গতি আসবে।
বিষয়টি জানাজানি হলে বছরের পর বছর ধরে গুরুত্বপূর্ণ নথিগুলো স্যাঁতস্যাঁতে মেঝেতে পড়ে থাকার পর দীর্ঘদিনের জন-ভোগান্তির লাঘব হবে বলেই মনে করছেন মাটিরাঙ্গার সচেতন মহল।

আপনার মতামত লিখুন :