মেলায় উস্কানিমূলক বই পেলে ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার

MD Aminul IslamMD Aminul Islam
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০১:৫৫ পিএম, ৩১ জানুয়ারি ২০১৯

অমর একুশে গ্রন্থমেলায় সাম্প্রদায়িক উস্কানি কিংবা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে এমন বই পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। বৃহস্পতিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, আমরা আগেই বলে দিয়েছি, মেলায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানতে পারে বা সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক কোনো বই প্রকাশ করা যাবে না। এরপরেও কোনো লেখক, ব্লগার ও প্রকাশকের এই ধরনের বই যদি স্টলে থাকে তবে তার বিরুদ্ধে বাংলা একাডেমির টিম থাকবে যারা ব্যবস্থা নেবেন। আমরা কোনো সাম্প্রদায়িক বই মেলায় রাখতে দেবো না। গোয়েন্দারা তাদের নজরদারি সার্বক্ষণিক করবে, এরকম কোনো বই পেলে সঙ্গে সঙ্গে ওই প্রকাশনার স্টল বন্ধ করে দেওয়া হবে। অন্যদিকে কোনো লেখক প্রকাশক ও ব্লগার যদি তাদের নিরাপত্তার প্রয়োজন মনে করে তাহলে তাদের নিরাপত্তা দেওয়া হবে।

এ বছরের অমর একুশে গ্রন্থমেলাকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, মেলাপ্রাঙ্গন ছাড়াও টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত থাকবে পুলিশের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এছাড়া মেলার চারপাশে পোশাকধারী পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি সাদা পোশাকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

তিনি বলেন, বইমেলা প্রাঙ্গনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পুলিশের পাশাপাশি বোম ডিস্পোজাল ইউনিট এবং সোয়াট টিমের সদস্যরা প্রস্তুত থাকবে। বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকা শতভাগ সিসিটিভির আওতায় থাকবে। এছাড়া টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বরের পুরো এলাকাও সিসিটিভির আওতায় থাকবে। অন্যদিকে মেলার ভেতরে এবং বাহিরে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করার জন্য আমরা ইতোমধ্যেই পিডাব্লিউডির সঙ্গে কথা বলেছি।

বইমেলা প্রাঙ্গনে নয়টি গেট থাকবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, বইমেলার বাংলা একাডেমির অংশে দুইটি প্রবেশ গেট ও একটি এক্সিট গেট থাকবে এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে তিনটি প্রবেশ গেট ও তিনটি এক্সিট গেট থাকবে। প্রতিটি গেটেই আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টরের পাশাপাশি নিরাপত্তা তল্লাশি থাকবে।

বিশৃঙ্খল পরিবেশ এড়াতে নারী ও পুরুষদের জন্য প্রবেশ পথে আলাদা আলাদা লেন থাকবে বলেও তিনি জানান।

পকেটমার ও ছিনতাইকারীদের রুখতে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, পকেটমার ছিনতাইকারী দমনে পুলিশের বিশেষ টিম থাকবে। বইমেলা এলাকা জুড়ে থাকবে আমাদের বিভিন্ন গোয়েন্দা টিম। তারা গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করবে যাতে করে, যে কোনো ধরনের ছিনতাই বা রাহাজানির ঘটনা না ঘটে। এছাড়া মেলাপ্রাঙ্গন ও এর আশপাশ এলাকায় কোরো ধরনের ভাসমান দোকান ও হকার থাকবে না। তাদের দমনে আমাদের ফুট ও মোবাইল পেট্রোলিং থাকবে।

বইমেলা উপলক্ষে বিশেষ ট্রাফিক ব্যবস্থা থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত রাস্তা যানজট মুক্ত থাকবে। যারা টিএসসির দিয়ে মেলায় আসবেন তারা গাড়ি পার্কিং করবেন ঢাবির মলচত্বরে আর দোয়েল চত্বর দিয়ে যারা আসবেন তারা গাড়ি পার্কিং করবেন রাস্তার দুই পাশে ও ঢাবির জিমনেসিয়ামে। তাছাড়া ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে আমাদের বিশেষ টিম কাজ করবে।

এসময় তিনি দর্শনার্থীদের উদ্দ্যেশে বলেন, ঢাকা শহরে ব্যাপকভাবে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে। সোনারগাঁও হোটেল থেকে শাহবাগ পর্যন্ত এমআরটির কাজ চলছে। তাই আমি দর্শনার্থীদের বলব যদি পারেন আপনারা মগবাজার ও দোয়েল চত্বর হয়ে মেলায় আসবেন। তাহলে যানজট কম পাবেন। কেননা সোনারগাঁও হোটেল থেকে শাহবাগ পর্যন্ত এমআরটির কাজ চলায় এই রাস্তায় যানজট বেশি।

এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সংঘবদ্ধভাবে জঙ্গিদের হামলা চালানোর শক্তি নেই। তবে দুই একজন বিচ্ছিন্নভাবে হামলার চেষ্টা করতে পারে। এ বিষয়ে গোয়েন্দারা সজাগ রয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন :