দ্বিতীয় দিনের মতো আমরণ অনশনে মাদ্রাসা শিক্ষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ>>>>>
বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক রেজিষ্ট্রেশনপ্রাপ্ত সকল স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষক ও শিক্ষিকারা।
বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সূত্রে জানা যায় গেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সরকারি সিলেবাসে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করেন মাদ্রাসার শিক্ষক শিক্ষিকারা। ইবতেদায়ী ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। ১৫১৯টি ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকগণ সর্বসাকুল্যে প্রধান শিক্ষক ২৫০০ টাকা, সহকারী শিক্ষক ২৩০০ টাকা বেতন পেয়ে থাকেন। কিন্তু এখনো ৮৫০০টি মাদ্রাসার শিক্ষকগণ প্রায় ৩৪ বছর যাবৎ কোনো বেতন পাচ্ছে না বলে জানা যায়। এই মাদ্রাসার মধ্যে ১ লাখ ২০ হাজার শিক্ষার্থী পড়ালেখা করেন।
জাতীয়করণের দাবিতে গত ১০ নভেম্বর ২০১৭ সালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে শিক্ষকরা। তারপর প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি দিয়ে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত জাতীয়করণের ঘোষণার আল্টিমেটাম দিয়ে কর্মসূচি স্থগিত করেন। গত ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭-এর মধ্যে জাতীয়করণের সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় ১ জানুয়ারি থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন। দাবি না মেনে নেওয়া ৯ জানুয়ারি থেকে আমরণ অনশন করে যাচ্ছে ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষিকারা।
গত মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) সকাল থেকে শুরু করে বুধবার (১০ জানুয়ারি) দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৩১ জন শিক্ষক গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আন্দোলনে আগত শিক্ষক মন্তাজ উদ্দিন বলেন, আমরা ৩৪ বছর ধরে বিনা বেতনে শিক্ষকতা করে যাচ্ছি। বেতন না পেয়ে ইবতেদায়ীর শিক্ষকরা মানবেতর জীবন যাপন করছে।
ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষিকা জান্নাত আক্তার বলেন, আজকে আমরা প্রেসক্লাবের সামনে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছি। বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান বেঁচে থাকলে এই তীব্র শীতে খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে হতো না। তিনি শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন করে আরও বলেন, ইবতেদায়ী শিক্ষকদের দাবি জাতীয়করণ মেনে নিয়ে শিক্ষকদের পাঠদানে মনোনিবেশ করতে সহযোগিতা করবেন।
বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি কাজী রুহুল আমিন চৌধুরী বলেন, জাতীয় করণের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমরণ অনশনের আন্দোলন চালিয়ে যাবো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।