‘জঙ্গিবাদ নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা অশুভ’

নিজস্ব প্রতিবেদক:>>>বিএনপি সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকার প্রতারণার জাল ফেলে জঙ্গিবাদকে দিয়ে তাদের অশুভ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করা বা প্রতিরক্ষা চুক্তিও হতে পারে। রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মঙ্গলবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।
সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, ‘আপনি যাকে সন্দেহভাজন বলে ধরছেন তারপর তার লাশ পাওয়া যাচ্ছে। তারপর বলছেন যে, হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছে। এতেই বোঝা যাচ্ছে সরকার কোনো একটা খেলা খেলছে।’
তিনি বলেন, ‘আপনি যদি সন্দেহভাজন হিসেবে সেই ব্যক্তিকে ধরেন তাহলে তাকে ইন্ট্রোগেট করবেন। তার মধ্য দিয়ে তাদের নেটওয়ার্ক কোথায়, তাদের সঙ্গে আর কে কে জড়িত, তাদের সাংগঠনিক পরিধিটা কী- এটা জানতে হবে। কিন্তু আপনি সেটা জানছেন না। না জেনে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী তাদের মেরে ফেলছে অথবা গুম করে দিচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে সন্দেহ দানাবাঁধা কি অমূলক?’
মানুষের এই সন্দেহকে খুবই স্বাভাবিক উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘আপনি রেস্টুরেন্টে, চা স্টলে যান, মানুষ ফিস ফিস করে বলছে। এই ধরনের দুর্বিষহ শাসন থাকলে মানুষ জোরে কথা বলতে ভয় পায়। তাই ফিস ফিস করে মানুষ বলছে যে, এখানে রহস্য লুকিয়ে আছে। ‘
রিজভী আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, জঙ্গিবাদ জাতীয় নির্বাচনের অন্তরায়। গতকাল আওয়ামী লীগের আরেক জন নেতা বলেছেন, বিএনপি-জামায়াতের মদদেই জঙ্গি হামলা ঘটছে। সেই নেতার উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আপনাদের দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে এটা পরিষ্কার যে, জঙ্গি হামলার বেনিফিসিয়ারি কারা? কারা জঙ্গিবাদকে জিইয়ে রেখে দীর্ঘদিন রাষ্ট্রক্ষমতা আঁকড়ে রেখেছে? এ বিষয়টি জনগণের কাছে এখন পরিষ্কার হয়ে গেছে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিকে বানচাল করার জন্যই জঙ্গি তৎপরতা সৃষ্টি করা হয়েছে। দানবীয় জঙ্গিবাদ দেশ থেকে দূর হোক তা বর্তমান সরকারই চায় না। যার ভুরি ভুরি প্রমাণ মিলছে জঙ্গিবাদ দমনে সরকারের ভূমিকায়। গণমাধ্যমে হানিফ মৃধা-সোহেলদের মা ও স্ত্রীদের মর্মস্পর্শী কান্নায় জনগণের কাছে জঙ্গিবাদ নিয়ে সরকারের রহস্যজনক ভূমিকা আরো স্পষ্ট হচ্ছে।’
গতকাল আওয়ামী লীগের আরেক জন নেতা বলেছেন, বিএনপি-জামায়াতের মদদেই জঙ্গি হামলা ঘটছে।
সরকার ভারতের নির্দেশ মানতে সদা তৎপর দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ভারতের কাছে নতজানু হয়ে থাকাটাই যেন তাদের ক্ষমতায় থাকার গ্যারান্টি। বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ভারতের কাছে এতোটাই নতজানু যে, ভারতের একটি প্রদেশের মূখ্যমন্ত্রী যতোটা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সেই স্বাধীনতা নেই। পশ্চিম বাংলার মূখ্যমন্ত্রীর কারণে আজও তিস্তা চুক্তি হয়নি। ভবিষত্যেও হবে কিনা তাও অনিশ্চিত।
সরকার পরিকল্পিতভাবে জঙ্গিবাদের সামগ্রিক তৎপরতা আড়াল করছে এ কথা জনগণ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের প্রাক্কালে প্রস্তাবিত প্রতিরক্ষা চুক্তির প্রতিবাদে সারাদেশ যখন ফুঁসে উঠছে ঠিক তখনই আবারও দেশব্যাপী রক্তাক্ত জঙ্গি তৎপরতা প্রস্তাবিত প্রতিরক্ষা চুক্তির বিষয় থেকে মানুষের দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার কৌশল হিসেবে দেখছে জনগণ। জঙ্গিবাদ নিয়ে দেশের মানুষকে গাঢ় অন্ধকারের মধ্যে ফেলে রাখা হচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্মমহাসচিব খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।