যে কারণে ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদল
চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও কর্মপন্থা নির্ধারণ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে সোমবার রাতে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির এ বৈঠকে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত না হলেও একটি বিষয়ে সব নেতা একমত হন যে, প্রায় তিন দশক পর অনুষ্ঠিতব্য ডাকসু নির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
১৯৯০ সালে ডাকসুর সর্বশেষ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিয়েছিল এবং জয়ীও হয়েছিল। ওই নির্বাচনে বিএনপির প্যানেল ছিল আমান-খোকন-আলম পরিষদ। সেই সময়ে রাজপথ কাঁপানো ছাত্রনেতা আমানউল্লাহ আমান, খায়রুল কবির খোকন ও নাজিমউদ্দিন আলমের নেতৃত্বাধীন প্যানেল জয়ী হয় ডাকসু নির্বাচনে।
ডাকসুর কর্তৃত্ব নিয়ে ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারবিরোধী তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। সর্বদলীয় ছাত্র-সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে সব ছাত্র সংগঠনকে এক কাতারে নিয়ে এসে রাজপথে আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। একটি পর্যায়ে সেই আন্দোলন এতটাই তীব্র থেকে তীব্র হয়ে উঠেছিল যে, সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজেছিল।
বিএনপির ভ্যানগার্ড ছাত্রদলের সেই সোনালি সময়টা এখনও ভোলেনি রাজনীতি সচেতনরা। বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারাও সেই আন্দোলন আবারও দেখতে চান। এ কারণেই ডাকসু নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
বিএনপি নেতারা মনে করছেন, ডাকসু নির্বাচন কেন্দ্র করে এ দেশের রাজনীতির বাঁক বদলেছে বহুবার। ডাকসু নির্বাচনে কারচুরির ইস্যু কাজে লাগিয়ে বহু গণআন্দোলন গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে। এবারও সেই স্বপ্নে বিভোর দলটির নীতিনির্ধারকরা। তাদের বিশ্বাস ডাকসু নির্বাচন স্বচ্ছ হলে ছাত্রদল জয়ী হবে।
আর ভোটে অনিয়ম হলে কিংবা একাদশ নির্বাচনের ছায়া পড়লে বৃহত্তর গণআন্দোলন গড়ে তোলা সম্ভব হবে প্রাচ্যের অক্সফোর্ডে। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়লে সেটি সারা দেশে প্রভাব ফেলবে। তখন খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম তীব্র করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা।



