নুসরাতের মামলাটি যেন হারিয়ে না যায়ঃ হাইকোর্ট

MD Aminul IslamMD Aminul Islam
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৩:০৭ পিএম, ১১ এপ্রিল ২০১৯

ফেনীর নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়ানোর ঘটনার তদন্ত যেন কুমিল্লার তনুর মতো না হয়। নুসরাতের মৃত্যুর পর আজ এ মন্তব্য করেন হাইকোর্ট। পত্রিকায় মৃত্যুর খবর দেখে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন আদালতের নজরে আনলে হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

এসময় আদালত বলেন: আমরা যতটুকু জানি এ ঘটনাটি পিবিআইকে ট্রান্সফার করা হয়েছে তদন্তের জন্য। এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজে এটা তদারকি করছেন। আমরা এ ঘটনায় সমভাবে ব্যথিত। আর আমরা কোনোভাবেই চাই না সাগর-রুনির মত, মিতুর মত, তনুর মত যেন এই মামলাটা না হারিয়ে যায়।

একপর্যায়ে আদালত আইনজীবী সৈয়দ সাইয়্যেদুল হক সুমনকে উদ্দেশ্য করে বলেন:
‘আপনারা খেয়াল রাখেন। আমরাও খেয়াল রাখছি। তদন্তের কোনো জায়গায় কোনো কারণে যদি যদি মনে হয় গাফিলতি হচ্ছে তাহলে আপনারা চলে আসবেন, আমরা ইন্টারফেয়ার (হস্তক্ষেপ) করব।’

এ বিষয়ে আইনজীবী সৈয়দ সাইয়্যেদুল হক সুমন চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: ‘নুসরাতের ঘটনাটা একটা হৃদয় বিদারক ঘটনা। রাতে আমি এবং আমার পরিবারের লোকজন ঘুমাতে পারিনি। সকাল বেলা মাননীয় বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চের বিষটি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আদালত কোন আদেশ না দিয়ে এসব কথা বলেন।

আদালত বলেন, যেহেতু বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন, আমরা এ বিষয়ে কোনো আদেশ দিতে চাই না। আমরা শুধু বলব নুসরাতের ঘটনা তনু বা অন্যদের মতো যেন হারিয়ে না যায়। ঘটনার বিষয়ে তদন্ত কাজে যেন কোনো গাফিলতি না থাকে।

ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি দুর্বৃত্তদেরও দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি হন। সেখানে পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে বুধবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল শনিবার সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে গিয়ে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যায় নুসরাত জাহান রাফি। মাদরাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের উপর কে বা কারা মারধর করেছে এমন সংবাদ পেয়ে তিনি ওই ভবনের তৃতিয় তলায় যান। সেখানে মুখোশপরা ৪/৫জন ছাত্রী তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। তিনি অস্বীকৃতি জানালে তারা গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় বর্তমানে নুসরাত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এর আগে ২৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে এনে ওই ছাত্রীর মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে। সে ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

জিএসনিউজ/এমএইচএম/এমএআই

আপনার মতামত লিখুন :