নুসরাত হত্যার লোমহর্ষ ঘটনার বর্ণনা দিল হাফেজ কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদকনিজস্ব প্রতিবেদক
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১০:১০ পিএম, ১৯ এপ্রিল ২০১৯
নুসরাত হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হাফেজ আবদুল কাদের।

ফেনীর সোনাগাজীতে নিপীড়নের পর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মূল পরিকল্পনাকারী হাফেজ আবদুল কাদের। তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে নুসরাত হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তার জবানিতে উঠে এসেছে নৃশংসভাবে নুসরাতকে পুড়িয়ে মারার লোমহর্ষক বর্ণনা।

বৃহস্পতিবার ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরাফ উদ্দিন আহমদের আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় এ জবানবন্দি দেন কাদের। সোনাগাজী সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার ‘ঘনিষ্ঠ’ হাফেজ কাদের বিকাল ৪টা থেকে রাত ৭টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা জবানবন্দি দেন। এ নিয়ে এই ঘটনায় চারজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

জবানবন্দিতে তিনি হত্যার পরিকল্পনা, হত্যাকাণ্ডে তার ভূমিকা, কীভাবে গায়ে আগুন দেয়া হয় তার বর্ণনা দিয়েছেন। সোনাগাজী সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার ‘ঘনিষ্ঠ’ হাফেজ কাদের বিকাল ৪টা থেকে রাত ৭টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা জবানবন্দি দেন। এ নিয়ে এই ঘটনায় চারজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

রাত সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম বিভাগীয় এসপি মো. ইকবাল গণমাধ্যমকে হাফেজ আবদুল কাদেরের স্বীকারোক্তির তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, হাফেজ আবদুল কাদের আদালতের কাছে স্বীকার করেছেন তিনি ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। ঘটনার দিন তিনি হত্যাকারীদের নিরাপত্তায় মাদ্রাসার গেট পাহারায় ছিলেন এবং পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে অন্যতম। নিজের সক্রিয় অংশগ্রহণের কথাও জানিয়েছেন তিনি। তার রুমেই হয়েছে পরিকল্পনা।

জবানবন্দিতে আবদুল কাদের বলেছেন, কাদের মাদ্রাসার বহিষ্কৃত অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার পক্ষে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন, কারাগারে সাক্ষাৎ এবং হত্যাকাণ্ডের দুদিন আগে অর্থাৎ ৪ এপ্রিল সকালে ও রাতে পৃথক সভায় উপস্থিত ছিলেন।

এসপি মো. ইকবাল আরও বলেন, ১২ জনের উপস্থিতিতে রাফি হত্যার রূপরেখা নির্ধারণে তিনি মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। তার পরামর্শে হত্যাকাণ্ডে কে কোথায় থাকবে, তা নির্ধারিত হয়। তার দায়িত্ব ছিল মাদ্রাসার পরিবেশ শান্ত রাখা এবং গেটের পশ্চিম পাশে অবস্থান করে পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা।

এদিকে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক শাহ আলম বলেন, হাফেজ আবদুল কাদের এ মামলার এজাহারের ৭ নম্বর আসামি। মামলার আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন ওরফে শামীম, মো. আবদুর রহিম ওরফে শরিফ এবং হাফেজ আবদুল কাদেরসহ চারজন স্বীকারোক্তিতে একই ধরনের কথা বলেছেন। তাদের স্বীকারোক্তি থেকেও অনেকের নাম উঠে এসেছে।

এ আগে এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে যারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, তারা সবাই জানিয়েছেন, এ হত্যাকাণ্ড সংগঠনের মূল পরিকল্পনাকারী আবদুল কাদের। তিনি সিরাজউদ্দৌলার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন, কারাগারে সিরাজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা এবং হত্যাকাণ্ডের দুদিন আগে অর্থাৎ ৪ এপ্রিল সকালে ও রাতে পৃথক পৃথক সভায় উপস্থিত ছিলেন। ১২ জনের উপস্থিতিতে নুসরাত হত্যার রূপরেখা প্রণয়নে তিনি মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। তার পরামর্শে হত্যাকাণ্ডে কে কোথায় থাকবে, তা নির্ধারিত হয়।

জিএসনিউজ/এমএইচএম/এমএআই

আপনার মতামত লিখুন :