নুসরাত হত্যার বর্ণনা দিল রিমান্ডে থাকা ছাত্রী মণি

স্টাফ রিপোর্টারস্টাফ রিপোর্টার
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১০:৫৬ পিএম, ১৯ এপ্রিল ২০১৯
সংগৃহিত

সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় সরাসরি অংশ নেয়া সহপাঠী কামরুন্নাহার ওরফে মণিকে নিয়ে ঘটনাস্থল ও বোরকার দোকান পরিদর্শন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

শুক্রবার দুপুরে পিবিআইয়ের একটি দল রিমান্ডে থাকা মণিকে নিয়ে ঘটনাস্থলে আসে।

নুসরাত হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. শাহ আলম বলেন, নুসরাত হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার কামরুন্নাহার ওরফে মণিকে বুধবার পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার দুপুরে পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবালের নেতৃত্বে একটি দল মণিকে নিয়ে সোনাগাজী পৌর শহরের মানিক মিয়া প্লাজায় একটি বোরকার দোকানে গিয়ে দোকান মালিকের সঙ্গে কথা বলে।

পরে পিবিআইয়ের দলটি সোনাগাজী মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের ছাদের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। সেখানে নুসরাতকে কীভাবে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে হত্যা করা হয়েছে, তার বিবরণ দেন মণি।

মো. শাহ আলম আরও বলেন, গ্রেফতার হওয়া মণির কাছ থেকে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া পুরুষদের গায়ে থাকা বোরকাগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে যান নুসরাত। তিনি এই মাদ্রাসার এবারের আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন। এর আগে ২৭ মার্চ মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার হাতে যৌন হয়রানির শিকার হন নুসরাত। এ ঘটনায় তার মা বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। মামলা তুলে নিতে আসামিপক্ষ নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করে। নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন নুসরাত। এর জের ধরেই তাকে ডেকে নিয়ে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ৮০ শতাংশ পোড়া শরীর নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে পাঁচ দিন লড়ার পর মারা যান নুসরাত।

নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার মামলাটি তদন্ত করছে পিবিআই। এ পর্যন্ত অধ্যক্ষ সিরাজ, মাদ্রাসাছাত্র নুর উদ্দিন, শাহাদাত, জোবায়ের আহম্মেদ, জাবেদ হোসেন, মাদ্রাসাছাত্রী উম্মে সুলতানা পপি এবং সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলমসহ ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত সাতজন আসামি। তাদের মধ্যে নুর উদ্দিন ও শাহাদাত রোববার রাতে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

জিএসনিউজ/এমএইচএম/এমএআই

আপনার মতামত লিখুন :