আমরা বাংলাদেশে আর্জেন্টিনা – ব্রাজিলকে নিয়েই পড়ে আছি: কাজী সালাউদ্দিন

জিএস নিউজজিএস নিউজ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৫:৩৭ পিএম, ০৯ জুলাই ২০১৮

জিএস ডেস্ক:>>>

রাশিয়া বিশ্বকাপে সমস্ত ইউরোপীয় সেমিফাইনাল হচ্ছে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এখন পঞ্চমবার। জার্মানি, স্পেন, পর্তুগালের মত প্রতিষ্ঠিত শক্তিগুলোর বিদায়কাল পরেও ইউরোপের জয়জয়কার ফুটবলটা কি ইউরোপে কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে? ইউরোপের এই দাপটের রহস্যাই-বা কী? আমি বলব, দাপট বলে কিছু কিছু নেই। দাপট তখনই, যখন একটি দল টানা দুই-তিনবার জিতবে। ব্রাজিল যেমন ১৯৫৮ থেকে ১৯৭০ চার আসরের মধ্যে তিনবারই সেরা। দুবার টানা দাপট তো এটা এখন অবশ্যই এই ধরনের হচ্ছে না

কিন্তু ইউরোপ সব সময়ই ফুটবল এর পাওয়ারশিপ আছে, আছে এবং ভবিষ্যতেও আছে। মূল ফুটবলটা তাই ইউরোপে। কারণটি পরিষ্কার, ইউরোপের ক্লাবগুলো বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ক্লাব। স্প্যানিশ লীগ, ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ, বুন্ডেসলিগা, সিরি “এ” তে আছে, ইউরোপের অন্যান্য সব লিগও দারুণ।

শক্তিশালী ক্লাব-কাঠামো সমৃদ্ধ দেশগুলোকে ঘুরে বেড়াচ্ছে, এটি সহজ হিসাব। ইউরোপ, লাতিন আমেরিকা বা এশিয়া বলে আলাদা কোন কথা নেই। লাতিনের সমস্যা ইউরোপের মতো ক্লাব-কাঠামোর দুর্বলতা লাতিনের খেলোয়াড়রা কিছু আগে আগে ইউরোপের ক্লাবগুলো নিয়ে গেছে ইউরোপ আরেকটি সুবিধা হল, এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে ভিসা লাগে না বেলজিয়ামের তিনটি বড় তারকাকে যেমন প্রিমিয়ার লীগে খেলেন

প্রান আপ হ্যাজার্ড চেলসি, লুক্কু ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ডি ব্রুনা ম্যানচেস্টার সিটি এ। উদাহরণস্বরূপ ডেলম এ জন্য যে ইউরোপের দেশগুলি কাছাকাছি কাছাকাছি এসেছিল এখন। লাতিনের খেলোয়াড়রাও বেশিরভাগ ইউরোপে খেলে মেসির জন্ম কোথায়? আর্জেন্টিনায়। কিন্তু ওকে প্লেয়ার বানিয়েছে কে? বার্সেলোনা। আর কিছু বলারই দরকার পড়ে না

প্রাসঙ্গিকভাবে বলি, আমরা এগোতে পারছি না ক্লাশ-কাঠামো না থাকার কারণে এ জন্য অর্থ প্রয়োজন। তবে শুধু টাকা থাকলেই হবে না তাহলে সৌদি আরব আলেল টাকা ঢেলে চ্যাম্পিয়ন হতে হবে এর সাথে দীর্ঘমেয়াদী এবং খুব ভালো পরিকল্পনা চাই। যেটা ইউরোপের মধ্যে আছে স্পনসর, দর্শক উন্মাদ দিক থেকে ইউরোপ এগিয়ে। আরও এগিয়ে যান। তাদের ফুটবল-বাজার আরও বড় হতে হবে

তবে এত সবারে কেউ কেউ সফলতার জন্য আরেকটি জিনিস প্রয়োজন-একটি সোনালী প্রজন্ম। যে প্রজন্মের এসেছিল ইংল্যান্ডের জন্য ১৯৬৬ চ্যাম্পিয়ন হয়। স্পেন ২০১০ সালে জার্মানির কথা নাই-বা বললাম। ১৯৯০ সাল থেকে এই প্রথম ইংল্যান্ড সেমিফাইনাল খেলছে। একসঙ্গে আট-দশজন ভাল খেলোয়াড়রা এসে আসছে এখন বেলজিয়ামও সেমিফাইনালে উঠে গেছে

শুধু ইউরোপ নয়, এখন সব দেশই এক নম্বর অগ্রাধিকার দেবে ফুটবল উন্নয়ন ইরানের মত দেশ শুধু কোচিং স্টাফদের পিছনে ১০ মিলিয়ন ডলার খরচ করছে সৌদি আরব বিশ্বকাপে খেলে গেল অথচ বিশ্বকাপের আগে খেলোয়াড় এবং কোচদের কাছে প্রায় তিনশ মিলিয়ন ডলার (৩০ মিলিয়ন ডলার) পাওনা ছিল তাদের ক্লাবগুলোর কাছে।

এই অবস্থায় সরকার এগিয়ে আসছে ১ বিলিয়ন ডলার (১০০ কোটি) ক্লাবসমূহে খেলোয়াড়দের-কোচদের অর্থ পরিশোধ। তার মানে রাষ্ট্র এখন ফুটবল উন্নয়নে বড় অবদান রাখছে আগামী দশ বছরে যা আরও বাড়বে এবং দেশের মধ্যে দূরত্ব আরও কম হবে। দশ বছর পর জাপান-কোরিয়া বড় দলগুলোর জন্য বড় হুমকি হতে হবে বলে মনে হয় আমার মনে হয় ইরানও বড় হুমকি হবে যুদ্ধ না হলে ইরাকও হতে পারে

প্রথম আলোর বাংলাদেশ আমরা কিন্তু সেই ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাকে নিয়েই আমি পড়ি। এই দুই দল বিডি আমাদের দেরিতে করেছে কিন্তু ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা বিশ্ব ফুটবলের একটি অংশ, মহাশূন্য নয়। বিশ্বকাপে খেলা ভালো, সে-ই জয়ী, কোন ফ্লুক না। ইউরোপের দেশগুলো ফুটবলের পিছনে বিনিয়োগের ফল লাভ করছে

বিনোদন, লাইফস্টাইল, তথ্যপ্রযুক্তি, ভ্রমণ, তারুণ্য, ক্যাম্পাস নিয়ে লিখতে পারেন আপনিও- gsnewsfeature@gmail.com

আপনার মতামত লিখুন :