ঢাবিতে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে দিনভর উত্তেজনা

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ>>>>
সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নতুন মোড় নিয়েছে।
আজ বুধবার দিনভর এ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করে। দফায় দফায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীদের’ আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। বিরোধীপক্ষ হিসেবে সচেতন শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মাঠ দখল করেছে ছাত্রলীগ। বাম সমর্থিত সংগঠন ও ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ও বিক্ষোভে ফের উত্তেজনা বিরাজ করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। প্রগতিশীল ছাত্রজোটের ব্যানারে বাম ছাত্র সংগঠনগুলো ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীদের’ পক্ষে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি দিয়েছে।
আগামী ২৯ জানুয়ারি সারা দেশে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট।
আজ বুধবার ঢাবির মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয় প্রগতিশীল ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ইমরান হাবিব রুমন।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবারের ঘটনায় হামলাকারীদের বিচারসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাম ছাত্র সংগঠন সমর্থিত ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীরা’। এরপর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে তারা। এর আগে ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থীরা’ এর ব্যানারে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ছাত্রলীগ। তারা ভিসির কার্যালয়ে হামলাকারীদের বিচার ও জড়িতদের বহিষ্কারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়।
এ দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও গত মঙ্গলবারের ঘটনায় পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যারা আন্দোলনের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রমে বাধা প্রদান, সহিংসতা এবং সম্পদের বিনাশ করে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে তাদের কাছে দায়িত্বশীল আচরণ করার জন্য কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দৃঢ়ভাবে বলতে চায় যে, যেকোনো নিপীড়নমূলক, সন্ত্রাসী ও নাশকতামূলক শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ড যারাই ঘটাক না কেন তাদের বিরুদ্ধে তদন্তসাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দুপুরে মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীদের’ ওপর ছাত্রলীগের হামলার বিচারসহ চার দফা দাবিতে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দেয় প্রগতিশীলরা।
জোটের সমন্বয়ক ইমরান হাবিব রুমন বলেন, যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে গণতান্ত্রিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সন্ত্রাস-দখলদারিত্বমুক্ত করতে হয়, গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হয়, তাহলে আমাদের আহ্বান থাকবে সব প্রগতিশীল সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী যাতে এ ধর্মঘটে অংশ নেয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইমরান হাবিব রুমন নিজেদের চার দফা দাবি উত্থাপন করেন। এগুলো হলো- মঙ্গলবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলাকারীদের বিচার করা, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আহতদের চিকিৎসা ব্যয় বহন করা, ১৫ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনের সাথে যুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নামে করা মামলা প্রত্যাহার এবং অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের নির্বাচন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্কট নিরসন করা।