ভারতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি!

GS News 24GS News 24
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১২:০৩ পিএম, ৩০ জুন ২০১৮

জিএস অনলাইন ডেস্কঃ>>>>

বর্তমানে ভারতে তেলের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। সরকারের যুক্তি, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম কম করা যাচ্ছে না। এরকম এক অবস্থায় ফের চাপ আসতে পারে তেলের দামের ওপরে। কারণ নতুন এক মার্কিন হুঁশিয়ারি।

 

মার্কিন চাপে ইরান থেকে তেল আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম আমদানিকারক ভারত। বৃহস্পতিবার এক বৈঠকে ৪ নভেম্বরের মধ্যে ইরান থেকে তেল আমদানি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে আমদানিকারকদের প্রতি আহ্বান জানান জ্বালানিমন্ত্রী ধর্মান্দ্র প্রাসাদ।

 

এরমধ্যে ইরানের সাথে সম্পর্ক পুনর্বিবেচনা করতে নয়াদিল্লির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসঙ্ঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণা অনুযায়ী নভেম্বরের মধ্যে বিশ্ববাজার থেকে ইরানের তেল প্রত্যাহার অসম্ভব বলে মন্তব্য করেছে তেহরান।

 

ইরানের সাথে করা ছয় জাতিগোষ্ঠীর পরমাণু চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার পরই নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে তেহরানবিরোধী পরিকল্পনা জোরদার কোরে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের পরমাণু সক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত কোরতে দেশটির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত কিছু নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হচ্ছে ৬ই আগস্ট থেকে। আর জ্বালানি খাতের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে ৪ নভেম্বর। এ অবস্থায়, ইরান থেকে তেল আমদানি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে বিশ্বসম্প্রদায়ের প্রতি আওভানের পাশাপাশি, নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুঁশিয়ারি দেয় ওয়াশিংটন।

 

এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে ইরানের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক ভারত সফর কোরেছেন জাতিসঙ্ঘের মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি। সাক্ষাত করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে। পরে দেশটির গণমাধ্যম এনডিটিভিকে দেয়া সাক্ষাতকারে বোলেন, ইরান থেকে তেল আমদানি বন্ধে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে তার। এছাড়া, তেহরানের সাথে সম্পর্ক পুনর্বিবেচনা কোরতে নয়াদিল্লির প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

 

জাতিসঙ্ঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের নিকি হ্যালি বলেন, ‘আঞ্চলিক প্রতিটি সমস্যাতেই ইরান জড়িত। যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিষয়ে সবসময়ই সতর্ক আছে। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ইরানের আঞ্চলিক হস্তক্ষেপের বিষয়ে বিশ্ববাসী সজাগ হোক, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। সবাই একসাথে ইরানের ওপর চাপ তৈরি করবে বলে যুক্তরাষ্ট্র আশাবাদী। না হয়, আরেকটি উত্তর কোরিয়া হবে ইরান।’

 

চীনের পরই ইরানের বৃহত্তম তেল আমদানিকারক ভারত। শুরু থেকে নয়াদিল্লি বোলে আসছে, ইরান ইস্যুতে জাতিসঙ্ঘ আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তারা মেনে চললেও যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা নিষেধাজ্ঞা তারা গ্রাহ্য করবে না। বৃহস্পতিবার ভারতের জ্বালানিমন্ত্রী ধর্মান্দ্র প্রাসাদ চৌঠা নভেম্বরের মধ্যে ইরান থেকে তেল আমদানি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার পাশাপাশি বিকল্প ঠিক করতে আমদানিকারকদের প্রতি আহ্বান জানান। যদিও বিষয়টি শুধু ভারতের নয় বলে দাবি কোরেছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ মুখপাত্র।

 

ভারত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাভেশ কুমার বলেন, ‘৪ নভেম্বরের মধ্যে ইরান থেকে তেল আমদানি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার বিষয়টি, কোনোভাবেই ভারতের একার বিষয় নয়। বিশ্বের সব দেশের প্রতি এ আহ্বান জানানো হয়েছে। সঙ্কট মোকাবিলায় খুব শিগগিরই আমরা পদক্ষেপ নেবো।’এর মধ্যেই, পরমাণু কর্মসূচিতে ব্যবহৃত ইউরোনিয়াম হেক্সাফ্লোরাইড উৎপাদনের একটি কারখান চালু করেছে ইরান।

 

ভারত যেসব দেশ থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি করে তার শীর্ষে রয়েছে ইরাক। এরপরই রয়েছে সৌদি আরব ও ইরান। ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ভারত ইরান থেকে ১৮.৪ মিলিয়ন টন অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে। ফলে মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় স্পষ্টতই বিপাকে পড়তে চলেছে ভারত।

আপনার মতামত লিখুন :