আসিয়ান সম্মেলনে অংশ নেয়ার জন্য ফিলিপাইন সফরের মেয়াদ বাড়ালেন ট্রাম্প

পূর্ব নির্ধারিত এশিয়া সফরের মেয়াদ বাড়িয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর অংশ হিসেবে ফিলিপাইনে তার অবস্থানের সময়সীমা একদিন বাড়ানো হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০ দেশের আঞ্চলিক জোট আসিয়ান-এর শীর্ষ সম্মেলনে ট্রাম্পের যোগদানের উদ্দেশ্যেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ সম্মেলনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা ইস্যুতে কথা বলার সুযোগ পাবেন ট্রাম্প। যদিও অনেকেই মনে করছেন এ ইস্যুতে তার প্রশাসনের অতিমাত্রায় সতর্ক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে।
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞ নিয়ে অবশ্য এখনও সরাসরি মুখ খোলেননি ট্রাম্প। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর নির্বাহী পরিচালক কেনিথ রথ বলেন, আসিয়ান সম্মেলনে অংশ নিয়ে ট্রাম্প যদি রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সরকারের নিপীড়নের বিরুদ্ধে কথা না বলেন, তবে সেটা হবে হতাশাজনক।
ট্রাম্পের ১৩ দিনের এশিয়া সফরের প্রাক্কালে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বাণিজ্য ও আমদানি নিষেধাজ্ঞা পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন কংগ্রেস। রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর সেনাবাহিনীর জাতিগত নিধনযজ্ঞের ঘটনায় শাস্তিমূলক পদক্ষেপ হিসেবে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য ইলিয়ট এঙ্গেল। তিনি বলেন, বার্মার সামরিক ও বেসামরিক উভয় নেতৃত্বের কাছে পরিষ্কার বার্তা পাঠাতে আমরা এই নিষেধাজ্ঞা ব্যবহার করতে চাই।
ইলিয়ট এঙ্গেল বলেন, সহিংসতা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। অপরাধীদের অবশ্যই জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। বার্মার সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর উপর অর্থপূর্ণ বেসামরিক নিয়ন্ত্রণ থাকা আবশ্যক।
আগামী ১৫ নভেম্বর মিয়ানমার সফরে যাচ্ছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন। রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞের ঘটনায় দেশটির ওপর অবিলম্বে জোরালো অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে তার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ৫৮টি মানবাধিকার সংগঠন। এতে রোহিঙ্গা নিপীড়নের সঙ্গে যুক্ত বার্মিজ সেনা কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্র সফরে বিধিনিষেধ আরোপ এবং একইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কথাও বলা হয়েছে।
এশিয়ায় ট্রাম্পের সফর পরিকল্পনায় রয়েছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইনের নাম। সফরে এ অঞ্চলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের ওপরও গুরুত্ব দেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ সময় তিনি ভিয়েতনামে এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশনের (এপিইসি) সম্মেলনে অংশ নেবেন। পরে ফিলিপাইনে আসিয়ানের এক সম্মেলনে যোগ দেবেন তিনি। সফরকালে ভিয়েতনামে অনুষ্ঠেয় এশিয়া প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন ও ফিলিপাইনে অনুষ্ঠেয় সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন তিনি।
প্রথমে জাপানে সফরে যাবেন ট্রাম্প। সেখানে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর শিনজো অ্যাবের সঙ্গে বৈঠকের পর দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইন সফরে যাবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কর্মকর্তারা বলছেন, ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুয়ার্তের প্রতি ট্রাম্প সমর্থন জানাতে অনিচ্ছুক ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী মন্তব্য করেন রদ্রিগো। তবে শেষ পর্যন্ত দেশটিতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।