এসএসসি’র ফরম পূরণে অতিরিক্ত ফি আদায়, বিপাকে গরিব শিক্ষার্থীরা!

জিএস নিউজ ডেস্কজিএস নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৩:৩৯ পিএম, ০৫ নভেম্বর ২০১৮

মেহরাব হোসেন মেহেদীঃ>>>

ফেনী সদর উপজেলার রামপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন অস্বচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। তাদের অভিযোগ, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি ও প্রধানশিক্ষকের যোগসাজসে এ অর্থ আদায় করা হচ্ছে।

 

শিক্ষার্থীরা জানায়, এসএসসির ফরম ফিলাপের সময় স্কুলের উন্নয়ন ও কোচিং ফি বাবদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে ৫ হাজার ৭২০ টাকা, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ৫ হাজার ৬৩০ টাকা এবং মানবিক  বিভাগে ৪ হাজার ৭০০ টাকা। এছাড়া নির্বাচনি পরীক্ষায় বিভিন্ন বিষয়ে অকৃতকার্যদের কাছ থেকে বিভিন্ন হারে জামানত ও জরিমানা নেওয়া হচ্ছে। এক বিষয়ে ২ হাজার টাকা, দুই বিষয়ে ৪ হাজার টাকা এবং তিন বিষয়ে ৬ হাজার টাকা পর্যন্তও আদায় করা হচ্ছে।

 

জানা গেছে, চলতি বছর এ স্কুল থেকে বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগে ৭৪ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে।

 

স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী ফারজানা ফারিয়া জানায়, অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে সে ফরম ফিলাপ করতে হয়েছে। রুকসানা নামে এক শিক্ষার্থী জানায়, প্রতি বছরই এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে গলাকাটা অর্থ আদায় করেন শিক্ষকরা। তারা বোর্ডের কোনও নির্দেশনা না মেনে নিজেদের নিয়মে পরীক্ষার ফি আদায় করে আসছেন। একই স্কুলের শিক্ষার্থী ঝুমি জানায়, কোচিং ও উন্নয়ন ফি বাবদ মাত্রাতিরিক্ত ফি আদায়ের ফলে গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা বিপাকে পড়েছেন।

 

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্র ও বোর্ড ফি মিলিয়ে এসএসসির ফরম পূরণে ১৭৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

 

রামপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল হাসেম অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘কোচিং ও উন্নয়ন ফিসহ বিজ্ঞান বিভাগে ৫ হাজার ৭২০ টাকা, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ৫ হাজার ৬৩০ টাকা এবং মানবিক  বিভাগে ৪ হাজার ৭০০ টাকা করে নিচ্ছি। শিক্ষার মান ধরে রাখার জন্য স্যারদের অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হয় তাই কোচিং ফি নেওয়া হচ্ছে। অভিভাবক পরিচয়ে তার সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, ম্যানেজিং কমিটির অনুরোধে অতিরিক্ত ফি আদায় করা হচ্ছে। এসব টাকা আদায়ের জন্য কোনও রেজুলেশন করা হয়নি। বোর্ডের টাকার মানি রিসিট দেওয়া হয় না।’

 

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে রামপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়ে ফেনী সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজনীন সুলতানা বলেন, ‘কেন্দ্র ও বোর্ড ফি ছাড়া অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার কোনও সুযোগ নাই। আর কোচিং এর নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ২০১২ সালে বাংলাদেশ সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী কোচিং বন্ধ করা হয়েছে। তবে আমি এসব বিষয় খতিয়ে দেখবো এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আপনার মতামত লিখুন :